হামাসের যে ২টি শর্ত মেনে নিয়ে যুদ্ধ বিরতি দিয়েছে ইসরাইল!


গাজা উপত্যতা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস জানিয়েছে, ইসরাইলের সাথে যুদ্ধবিরতির জন্য তারা যে দুটি শর্ত দিয়েছিল, উভয়টিই মেনে নেয়া হয়েছে। প্রথম শর্তটি ছিল আল-আকসা মসজিদে ‘ইসরাইলি আগ্রাসন’ বন্ধ করা, দ্বিতীয় শতটি হলো পূর্ব জেরুসালেমের শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ বন্ধ করা। হামাস দাবি করেছে, দুটি দাবি পূরণের ব্যাপারে তাদেরকে ‘নিশ্চয়তা’ দেয়া হয়েছে।

তবে ইসরাইলের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, হামাসের এই দাবি ভুয়া। পরিচয় প্রকাশ না করে ওই কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে কন্ট্রিবিউটিং সংবাদদাতা বারাক রাভিদ এক্সিয়স নিউজ সাইটকে এ তথ্য জানান।

এর আগে হামাসের সিনিয়র এক নেতা হিজবুল্লাহ সমর্থক আল মায়াদিন নেটওয়ার্ককে জানান, আল-আকসা মসজিদ ও শেখ জাররাহয় ‘ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ’ হওয়ার নিশ্চয়তা হামাস পেয়েছে। ওসামা হামদান এসব নিশ্চয়তার বিস্তারিত বর্ণনা দেননি। কিংবা কিভাবে তা বাস্তবায়িত হবে, তাও জানাননি।
এদিকে যুদ্ধবিরতি পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য দুটি মিসরীয় নিরাপত্তা প্রতিনিধিদল গাজা ও ইসরাইল যাবে।

মিসর এই যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ গ্রহণ করে। শরের এক প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি বৈঠকে বসেছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা মিশরের প্রস্তাবিত চুক্তিতে রাজি হয়ে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলেছে, এই যুদ্ধবিরতি হবে সমঝোতার ভিত্তিতে এবং নিঃশর্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এটাই বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুদ্ধ দেখতে চায় না।

ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও কখন থেকে তা কার্যকর হবে, সেটা বলেনি। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ২টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে বলে হামাস জানিয়েছে।

ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়াকে নিজেদের ‘বিজয়’ হিসেবে দেখছে হামাস। দলটির এক নেতাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, এটা ফিলিস্তিনি জনগণের ‘বিজয়’ এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘পরাজয়’।

হামাস নেতারা এটাও বলেছেন, ঘোষণা এলেও যুদ্ধবিরতি চুক্তির খুটিনাটি চূড়ান্ত না হওয়া অবধি তারা সতর্ক অবস্থায় থাকবেন।

মিশরের প্রেসিডেন্ট আবুল ফাত্তাহ সিসিকে উদ্ধৃত করে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি দুই পক্ষ প্রতিপালন করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য মিশরীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে যাচ্ছেন।

মিশরের পাশাপাশি কাতার ও জাতিসংঘ দুই পক্ষকে যুদ্ধবিরতি রাজি করানোর ভূমিকায় ছিল বলে বিবিসি জানিয়েছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও তা কতদিন টিকে থাকবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সাবেক দূত ডেনিস রোস।

তিনি বিবিসিকে বলেছেন, এই ধরনের যুদ্ধবিরতি স্বল্প সময়ের জন্য শান্তি আনতে পারবে হয়ত।

তার ভাষ্য, যতক্ষণ পর্যন্ত গাজার নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের হাতে রকেট থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্থায়ী শান্তি সুদূরপরাহত।

তার কথার প্রতিধ্বনি পাওয়ার কথাও জানিয়েছে বিবিসি। তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও গাজা থেকে রকেট হামলার খবর দিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে ইসরায়েলির বিমান হামলার খবর।

About reviewbd

Check Also

অহঙ্কার করা ভালোনা! রানু মণ্ডল তার প্রমাণ

কলকাতার রানাঘাটের স্টেশনের ভিক্ষুক থেকে মুম্বাইয়ের রেকর্ডিং স্টুডিওতে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে রাতারাতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *