ইতিহাসের পরতে পরতে এমন অনেক ঘটনাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, যা আমাদের অবাক করবেই। যাত্রীবোঝাই একটি জাহাজ, যেখানে হাজারো মানুষের আনাগোনা, হঠাৎ করেই সেই জাহাজ নাকি গায়েব হয়ে যায় মাঝ সমুদ্রে! এমনই দুটি জাহাজের কাহিনী জানব আজ। পরবর্তীতে সেই জাহাজের হদিস পাওয়া গেলেও সেখানে পাওয়া যায়নি কোনো মানুষের খোঁজ।
১৮৭২ সালের ৭ নভেম্বর ক্যাপ্টেন মেরি সেলেস্তে তার স্ত্রী ও দুই বছর বয়সী কন্যা এবং ৭ জন ক্রু নিউইয়র্ক থেকে ইতালি যাচ্ছিলেন। এক মাসের মধ্যেই তাদের সেখানে পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে যাত্রা শুরুর মাসখানেক পরে একটি ব্রিটিশ জাহাজ দেই গ্রাশিয়ার নাবিকরা ওই জাহাজটিকে আটলান্টিক মহাসাগরে উদ্দেশ্যহীনভাবে ভাসতে দেখেন। তারা সেখানে সাহায্যের জন্যে গিয়ে দেখেন আটলান্টিক মহাসাগরে ভাসতে থাকা ওই জাহাজে একটি লোকও নেই। জাহাজে তখন যাত্রীদের মজুদ করা ছয় মাসের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী অক্ষত ছিল।
অবাক করা বিষয়টি হলো যে ওই জাহাজের মেঝেতে জমেছিল প্রায় ৩ ফুট উচ্চতার পানি। তবে এরপরেও জাহাজটি ডুবে যায়নি। যাত্রীরা জাহাজটি ত্যাগ করার পরই এলোপাতাড়ি ভেসে চলার কারণে জাহাজটির এই হাল হয় বলে ধারণা নাবিকদের। কিন্তু সেদিন জাহাজের ঠিক কী হয়েছিল, সেটি এখনো জানা যায়নি। তাই মেরি সেলেস্তে জাহাজটি পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম সেরা ভুতুড়ে জাহাজ।
ক্যারল এ. ডিয়ারিং। ১৯২০ সালের কোনো এক দিন ১০ জন ক্রু নিয়ে এই কার্গো জাহাজটি রিও ডি জেনেরিওতে পাড়ি জমায়। কিন্তু ক্যাপ্টেন অসুস্থ হয়ে পড়ায় রিও থেকে নতুন ক্যাপ্টেন নিয়ে জাহাজটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ফেরার পথে তারা তাদের নোঙর হারিয়ে ফেলেছিল। পরের দিন জাহাজটি পথচ্যুত হয়ে পড়ে। চারদিন পর উদ্ধারকর্মীরা জাহাজে উঠে দেখতে পান সবকিছু ঠিক আছে, শুধু লাইফবোটম্যান ও কোনো ক্রু নেই। এমনকি তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও কিছুই নেই। কিন্তু ঝড় আসার আগেই জাহাজের সব লোক কোথায় চলে গেল, তা আজ পর্যন্ত অজানাই রয়ে গেল।
সূত্র: ন্যাশনাল পার্ক ফাউন্ডেশন, হিস্টোরি