মারণ রোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার খালা। লকডাউন চলার কারণে শেষ দেখা হয়নি, এমনকি শেষকৃত্যেও উপস্থিত থাকতে পারেননি তিনি। তাই নিজের পালিত ভেড়া দিয়ে ‘হৃদয়’ চিহ্ন তৈরি করে নিজের প্রিয় খালাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তিনি। বলছিলাম অস্ট্রেলিয়ার কৃষক বেন জ্যাকসনের কথা।
অস্ট্রেলিয়ান কৃষক বেন জ্যাকসন যখন ৪০০ কিলোমিটার দূরে নিউ সাউথ ওয়েলসে নিজের খামারে অবস্থান করছিলেন তখন কুইন্সল্যান্ডে দুই বছর ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে হেরে যান তার খালা ডেব্বি। করোনা সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্রিজবেন থেকে চাচীর শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাননি জ্যাকসন। ফলে নিজের ভেড়া ব্যবহার করে খালার প্রতি ভালোবাসা দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
প্রথমে তিনি ভেড়া চরানোর মাঠে গিয়ে হৃদয়ের আকারে শস্য বিছিয়ে দেন। এরপর তিনি তার ভেড়ার পালকে ছেড়ে দেন। তখন হাজার হাজার ভেড়া হৃদয়ের আকৃতিতে ছড়িয়ে থাকা শস্যগুলি খাওয়া শুরু করে এবং বিশাল আকৃতির এক হৃদয়ের ছবি ফুটে ওঠে। এসময় আকাশ থেকে ড্রোনের মাধ্যমে হৃদয়ের আকৃতিতে ভেড়ার পালের শস্য খাওয়ার এই বিরল দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করা হয় এবং ছবিও তোলা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করার পরপরই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। তার খালার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই জ্যাকসন ভেড়ার পাল দিয়ে ভালোবাসার ছবি আঁকার এই দৃশ্যের ভিডিও তার আত্মীয় স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দেন।
বেন জ্যাকসন বলেন, তার সঙ্গে দেখা করা, সান্ত্বনা জানিয়ে দুইটি কথা বলা বা শবযাত্রায় যাওয়ার কোনো উপায় আমার সামনে ছিল না। আমি খুবই হতাশ, অসহায় বোধ করছিলাম তার মৃত্যুর খবর শোনার পর। এসময়ই ক্ষেতে বিশাল একটি হৃদয় আকৃতির ইমেজ করার আইডিয়া আমার মাথায় আসে এবং আমার মনে হলো- এটি হতে পারে তাকে ভালোবাসা জানানোর সবচেয়ে চমৎকার উপায়।
গত মে মাসে খালার সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল জ্যাকসনের। তারপর লকডাউন জারি হওয়ায় ব্রিসবেনে যেতে পারেননি তিনি। তিনি আরও জানান, আগেও তিনি নিজের গৃহপালিত পশু পাখি, বিশষত ভেড়া দিয়ে এ ধরনের শিল্পকর্ম করেছেন এবং তার খালা বরাবরই এসবের ভক্ত ছিলেন। জীবিত অবস্থায় আমাকে উৎসাহও দিতেন তিনি। তিনি যেখানেই থাকুন, আমার বিশ্বাস তিনি দেখছেন কী পরিমাণ মানুষ আমার এই কাজটিকে ভালবেসেছেন। আর আমি এই কাজটি করতে পেরেছি তাকে ভালবাসি বলেই।