নাসির-তামিমা এখনও ‘নিকৃষ্ট ব্যভিচারে’ লিপ্ত!

দেশের কতিপয় চাঞ্চল্যকর মামলার মধ্যে ক্রিকেটার নাসির হোসাইন, সৌদিয়া এয়ার লাইন্সের কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা এবং তামিমার মা সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে করা ব্যবসায়ী রাকিব হাসানের মামলা অন্যতম। সম্প্রতি যেটির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা হয়েছে। যেটি তদন্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্পেশালাইজড ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন (এসআইঅ্যান্ডও) ইউনিট। যেখানে এই ৩ জনকেই দোষী হিসেবে উল্লেখ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন, বাদী রাকিব হাসান এবং আইনজীবী ইশরাত হাসানের ভাষ্য বলছে, মামলার বাদী রাকিবের স্ত্রী তামিমা এখনও ক্রিকেটার নাসিরের সঙ্গে নিকৃষ্ট ব্যভিচারে লিপ্ত রয়েছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক শেখ মো. মিজানুর রহমান তদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, ‘মামলাটি তদন্তকালীন সময়ে বাদীর আরজি পর্যালোচনায় দেখা যায়- বাদী বিবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযোগে ১নং বিবাদী তামিমা সুলতানার বাদীর সাথে বিবাহের সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় ২নং বিবাদী নাসির হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।

১নং বিবাদী তামিমা সুলতানার সাথে অবৈধ বিবাহের সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন যাহা নিকৃষ্ট ব্যভিচার। ২নং বিবাদী মো. নাসির হোসাইন ১নং বিবাদী তামিমা সুলতানাকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন বিবাদীদ্বয়ের এহেন কার্যকলাপে বাদীর চরমভাবে মানহানি হয়েছে যার দরুন বাদী ও তার সন্তানের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে।’

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ‘মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ক্রিকেটার নাসির হোসাইন অবৈধভাবে রাকিব হাসানের স্ত্রী তামিমাকে বিয়ে করেছেন। যা মুসলিম ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। ফলে এটি নিঃসন্দেহে অপরাধ। এ বিষয়ে এখন আদালতই সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে, যেহেতু পিবিআই তদন্ত করে প্রমাণ পেয়েছে- নাসিরের সঙ্গে তামিমার অবস্থান অবৈধ। যা স্পষ্ট ব্যভিচার হচ্ছে। ফলে তাদের উচিৎ হবে, আলাদা থাকা। কেননা তামিমার স্বামী এখনও রাকিব হাসানই রয়েছেন।

অর্থাৎ, ক্রিকেটার নাসির তার বৈধ স্বামী নন। তাই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আদালতের মাধ্যমে এই জটিলতা সুরাহার আগ পর্যন্ত তাদের নিজেদের সামাজিক মানসম্মানের কথা মাথায় রেখে আলাদা অবস্থানে থেকে সেটি স্পষ্ট করা দরকার। দেশের আইন ও মুসলিম রীতিনীতি অনুযায়ী, একজন নারী এক স্বামী বর্তমান থাকা অবস্থায় অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারেন না। যদি তা করেন, সেটি অবশ্যই আইনের লঙ্ঘন হবে। যে কারণে সংশ্লিষ্ট সকলকেই আইনের আওতায় আসতে হবে।’

এদিকে রাকিব হাসান বলেন, ‘তামিমা সুলতানা আমার স্ত্রী হিসেবে কাগজ কলমে বর্তমান রয়েছেন, বাস্তবতায় নাসিরের কাছে- এটি পিবিআই নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে বের করেছে। যা প্রতিবেদন আকারে আদালতেও জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তামিমা সুলতানা আমার স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও নাসির আমার স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত রয়েছেন। আমি নাসির ও তামিমাকে আলাদা থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি তারা একসঙ্গে থাকাকে কন্টিনিউ করতে চায়, তাহলে তামিমা আমাকে তালাক দিয়ে দিক। তাতে তাদের একসঙ্গে থাকার বিষয়টি বৈধতায় রূপ নেবে। তারা এখন যা করছে সেটা ব্যভিচার।’

মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিমানবালা তামিমা সুলতানা এখনও ব্যবসায়ী রাকিব হাসানের স্ত্রী। সে হিসেবে ক্রিকেটার নাসির হোসাইন ও তার স্ত্রী পরিচয় দেয়া তামিমা যে বিয়ে করেছেন সেটি অবৈধ। মা সুমি আক্তারের সহযোগিতায় মিথ্যা তালাকের নোটিশ তৈরি করেন তামিমা সুলতানা। তারা বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পত্র প্রেরণের ভুয়া রিসিট প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি করে। সেটি খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করায় এবং পূর্ববর্তী স্বামী (রাকিব হাসান) বলবৎ থাকা অবস্থায় বিবাদী মো. নাসির হোসাইনকে বিবাহ করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। প্রেস কনফারেন্স করে বাদীর মানহানিতে সহযোগিতা করেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নাসির হোসাইনের বিরুদ্ধে বিবাদী তামিমা সুলতানার সঙ্গে বাদীর (রাকিব হাসানের) বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান থাকা অবস্থায় জেনে বুঝে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, অবৈধ বৈবাহিক সম্পর্ক দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন, বাদীর স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিজের হেফাজতে রাখা, প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রেস কনফারেন্স করে বাদীর স্ত্রীকে নিজের স্ত্রী বলে প্রচার করায় বাদীর মানহানি হয়েছে বলে তা অপরাধ।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে বিয়ে করেন ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মী। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তাদের হলুদ সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শনিবার ২০ ফেব্রুয়ারি তাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে অভিযোগ উঠে আগের স্বামী রাকিবকে তালাক না দিয়েই ক্রিকেটার নাসিরের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মী। যেটিকে কেন্দ্র করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা দায়ের করেন ব্যবসায়ী রাকিব হাসান।

সেই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনই গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক মিজানুর রহমান। পরে ওই আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন মোহাম্মদ জসীম। তার কাছেই নাসির, তামিমা ও সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন জানান রাকিবের আইনজীবী ইশরাত হাসান। সেই আবেদন অনুযায়ী আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ৩ জনকেই আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত।

About reviewbd

Check Also

শাকিবের পারিশ্রমিক এক কোটি কেন, ২৫ লাখ টাকাও বেশি হয়ে যায়

‘প্রিয়তমা’ সিনেমাটি এরই মধ্যে ৪০ কোটি টাকার ওপর আয় করেছে বলে সিনেমাসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। তবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *