প্রেমের টানে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেছেন এক কলেজছাত্রী। মির্জাগঞ্জের পূর্ব সুবিদখালী গ্রামের মুসলমান যুবক মো: খোকন খানকে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করেছেন সুবিদখালী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জয়ন্তী রানী মালা (১৮)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তিনি তার নাম রেখেছেন ফাতেমা বেগম।
এ দিকে ওই তরুণীর কোনো খোঁজ না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে কলেজছাত্রীর বাবা সুনীল কুমার শীল মুসলিম যুবককে প্রধান ও ছয়জনকে আসামি করে মির্জাগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই খোকনের চাচা মো: আজিজ খানকে উপজেলার পূর্ব সুবিদখালী নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কিসমতপুর গ্রামের সুনীল কুমার শীলের মেয়ে সুবিদখালী সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী জয়ন্তী রানী মালা মায়ের সাথে উপজেলা সদর সুবিদখালীতে ভাড়া বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন। সুবিদখালী থাকার সুবাদে একই উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের পূর্ব সুবিদখালী গ্রামের মো: খোকনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
দীর্ঘ ৩ বছরের অধিক সময়ের সম্পর্কের একপর্যায়ে পরিবারের লোকজনের অজান্তে মালা গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে এফিডেভিটের মাধ্যমে হিন্দু ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হন। মসজিদের ইমামের মাধ্যমে কালিমা পাঠ করে মুসলিম হন। পরে বরিশাল জেলা চৌমাথা বাজার নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে ধর্মান্তরিত তরুণী ফাতেমা বেগম ও মো: খোকন খানকে বিয়ে করেন।
ধর্মান্তরিত হওয়া ওই তরুণীর বাবা ঢাকায় চাকরি করেন। কলেজছাত্রী জয়ন্তী রানী মালা ওরফে ফাতেমা বেগম ২ ভাই বোনের মধ্যে বড়।
এ দিকে ধর্মান্তরিত ওই তরুণীর বাবা সুনীল কুমার শীল জানান, তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। পরে মো: খোকনকে প্রধান করে, তার বাবা ও বড় ভাইসহ ছয়জনের নামে বৃহস্পতিবার রাতে মির্জাগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। তবে আমার মেয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছে কি না নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত খোকন খানের বড় ভাই ইমরান খাঁন জানান, আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে হিন্দু ধর্ম ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী আমার ভাইয়ের সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না।
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মহিবুল্লাহ জানান, কলেজছাত্রী অপহরণের ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে করেছেন তার বাবা। প্রাথমিক তদন্তে ওই তরুণী হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টি জানা গেছে।