আমি ছিলাম সুপারস্টার, কেউ অশ্লীলতার প্রমাণ দিতে পারবে না : মুনমুন

‘আই ওয়াজ অ্যা সুপারস্টার, আমি কেন অশ্লীল চলচ্চিত্রে অভিনয় করবো? আমি যখন চলচ্চিত্রে অভিনয় করতাম তখন ছিলাম আনবিটেবল। অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আমি বেশিরভাগ ছবিতে লেডি অ্যাকশন চরিত্রে কাজ করেছি তখন আমাকে পেছনে ফেলার কেউ নেই। প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে কয়েকজন সাংবাদিক অশ্লীল নায়িকা তকমা জুড়ে দিয়েছে। কিন্তু কেউ প্রমাণ দেখাতে পারবে না।

কথাগুলো বলছিলেন চিত্রনায়িকা মুনমুন। বাংলাদেশের অশ্লীল চলচ্চিত্রের সূচনালগ্নের একজন হিসেবে মুনমুনকে অভিহিত করা হয়। কিন্তু সেই অভিযোগ কালের কণ্ঠের নিকট অস্বীকার করেছেন মুনমুন। তিনি বলেন, ২০০২ থেকে থেকে ২০০৬ পর্যন্ত অশ্লীল চলচ্চিত্র হয়েছে। আমি চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি ২০০৩ সালে। অশ্লীল অভিনেত্রীদের কোর্টে হাজিরা দিতে হয় এখনো, কই আমাকে তো দিতে হয় না।

মুনমুন চলচ্চিত্রের পরিচালকদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দেখেন আমি কাদের ছবিতে কাজ করেছি? মালেক আফসারী, মনোয়ার খোকন, শহীদুল ইসলাম খোকন, দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। তাদের বিরুদ্ধে কি অশ্লীলতার অভিযোগ আছে? তারা গুণী পরিচালক। নিশ্চই তারা অশ্লীল চলচ্চিত্রে কাজ করেন নি।

আপনি অশ্লীল ছবিতে কাজ করেন নি? এমন প্রশ্নের জবাবে মুনমুন বলেন, অবশ্যই না। লেডি অ্যাকশন ছবিতে কাজ করতে গিয়ে অনেকের চক্ষুশূল হই। এছাড়া এই ক্যারেক্টারগুলো একটু ডেসপারেট হয়। যার কারণে সহজেই আমাদের নেতিবাচক চরিত্রে উপস্থাপন করে ফেলতে পারেন যে কেউ। কেউ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে না আমাকে অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখেছেন। তবে আমি অভিনয় করেছি এমন অনেক সিনেমা অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।

মুনমুন বলেন, ওইসব চলচ্চিত্রে আমার পার্শ্বভিনেত্রীদের অশ্লীলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যার কারণে আমাকে অশ্লীলতার ট্যাগ দেয়াটা সহজ হয়েছে। ধরেন আমি গোসলের দৃশ্যে অভিনয় করছি, সেখানে আমার মুখ দেখিয়ে বাকিটা আমার ডামি হিসেবে অন্য মেয়েকে দেখানো হচ্ছে। আমি এইসব দৃশ্যে অলওয়েজ সুইম স্যুট পরে অভিনয় করেছি।

নিজেকে অশ্লীল ছবির নায়িকা মনে করেন না মুনমুন। এর জন্য নেপথ্যের অনেক মানুষ দায়ী বলেও জানান তিনি। অশ্লীলতার জন্য দায়ী কারা বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মুনমুন কালের কণ্ঠকে বলেন, দেখেন সবাই অশ্লীলতার বিষয়ে জানার জন্য ফোন দেয় নায়ক-নায়িকাকে। এই যে আমাকেও কম ফোন দেয়া হয় না। কিন্তু কেন? কেন ডিরেক্টরদের ফোন দেয়া হয় না, কেন তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় না আপনারা কেন অশ্লীল ছবি করেছেন। ডিরেক্টরের হাত ধরেই তো অশ্লীলতার যাত্রা। তারাই তো মেয়েদের নিয়ে এসে কাপড় খুলিয়েছে।

শূন্য দশকের শুরুর দিকের ব্যস্ত এই অভিনেত্রী বলেন, দেখেন অশ্লীল ছবিতে আপনি শাকিব খানকেও পাবেন, মান্নাকেও পাবেন। তাই বলে তারা কিন্তু অশ্লীল ছবি করেন নি। তাদের ছবিতে জুড়ে দেয়া হয়েছে কাটপিস। অশ্লীল ছবির এই অবস্থার জন্য কাটপিস জুড়ে দেয়ার যে কালচার শুরু হয়েছিল সে কথা তো কেউ বলে না। শুধু কিছু সাংবাদিকের সাথে আমার মনোমালিন্যের কারণে তারা আমার বিরুদ্ধে লেখা শুরু করে দেয়।

কিন্তু ধরেন ‘রাণী কেন ডাকাত’ ছবির মাধ্যমে পোস্টারে অশ্লীলতা চোখে পড়ে। এসবও কি অস্বীকার করার করবেন? মুনমুন কালের কণ্ঠকে বলেন, দেখেন আমরা অভিনেত্রী, অভিনয় করি এসে, পেমেন্ট নিয়ে চলে যাই। এরপর তেমন করে খেয়াল করা হয়না। এটা অবশ্য আমাদের ভুল, কনসার্ন হওয়া উচিতৎ ছিল। তবে ফিল্মে আমাকে কেউ নগ্নভাবে দেখেছে এটা কেউ বলতে পারবে না। ইউটিউব ঘেঁটে দেখুন, আমার আগের ছবি তো আছে সেখানে আমাকে কি অশ্লীলভাবে দেখা যায় কি না!

মুনমুন এখনো এদেশের চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। এখন নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করছেন। সম্প্রতি দেমাগ ছবির কাজ শেষ করেছেন। এখন করছেন তোলপাড় ছবিতে। বছরে দু থেকে তিনটি ছবিতে কাজ করছেন তিনি। এছাড়া সারাবছর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থানে অংশ নেন চিত্রনায়িকা মুনমুন। রাজধানীর উত্তরার নিজের একটি গার্মেন্টস ছিল সেটি ভাড়া দিয়েছেন।

মুনমুন রেডিও ৭১ এর সাথে আগামীকাল শুক্রবার ‘রেডিও ৭১ এফএম 98.4’-এ রাত ১০টায় ‘সাবধান বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশ নিয়ে ব্যক্তিগত ও ফিল্ম নিয়ে নানা কথা বলবেন। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করবেন সাদেক সামি।

পারিবারিক জীবনে নিজেকে সুখী উল্লেখ করে মুনমুন বলেন, আমি অনেক হ্যাপি। আমার দুই সন্তান, মা আর স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছি। বড় ছেলে ‘যশ’ রাজধানীর একটি স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড ফোরে পড়েন, ছোট ছেলে শিবরাম কেবল স্কুলে ভর্তি হয়েছেন। স্বামী মীর মোশাররফ হোসেন ব্যবসার সাথে যুক্ত।

About reviewbd

Check Also

শাকিবের পারিশ্রমিক এক কোটি কেন, ২৫ লাখ টাকাও বেশি হয়ে যায়

‘প্রিয়তমা’ সিনেমাটি এরই মধ্যে ৪০ কোটি টাকার ওপর আয় করেছে বলে সিনেমাসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। তবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *