মানুষের কত কিছুই না স্বপ্ন থাকে, শখ থাকে। আর তা পূরণে তার চেষ্টাও থাকে। জাপানে এক ব্যক্তির ‘আজীবনের স্বপ্ন ও শখ’ ছিল তিনি কোনো প্রাণীর মতো সাজবেন। তাঁর সেই ইচ্ছা অবশেষে পূরণ হয়েছে। তবে এর জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে তাঁর। তাঁর ইচ্ছা তিনি কুকুর সাজবেন। আর কুকুর সেজে তোলা কিছু ছবি ওই ব্যক্তি তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন। তাঁর এই ইচ্ছা পূরণে সাহায্য করেছে জেপেট নামের একটি পেশাদার সংস্থা।
জাপানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ মিনাভি এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হচ্ছে, জেপেট সিনেমা, বিজ্ঞাপন, পার্কের জন্য অনেকগুলো ভাস্কর্য সরবরাহ করে। জাপানে জনপ্রিয় মাসকট চরিত্রে যাঁদের অভিনয় করতে দেখা যায়, সেসব অভিনেতার জন্যও বিশেষ ধরনের পোশাক তৈরি করে থাকে জেপেট।
আর প্রাণীর (কুকুর) বেশ ধারণের জন্য এ জেপেটেরই সাহায্য নিয়েছেন জাপানি ওই ব্যক্তি। তাঁর জন্য কুকুরের বেশ ধরা যায়, এমন একটি পোশাক বানানোর কথা বলেন তিনি। এর জন্য খরচ পড়ে ২০ লাখ ইউয়ান। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৪ লাখ টাকা। আর ওই পোশাক তৈরি করতে জেপেটের মোট ৪০ দিন সময় লেগেছে।
টুইটার পোস্ট অনুযায়ী ওই ব্যক্তির নাম তোকো। তিনি কুলি নামের একটি প্রজাতির কুকুরের বেশ ধারণ করেছিলেন। কুলি প্রজাতির দীর্ঘ লোমশের কুকুর স্কটল্যান্ডে দেখতে পাওয়া যায়। এই কুলি প্রজাতির কুকুর বিষয়ে তোকোর কাছে জানতেও চেয়েছিল নিউজ মিনাভি। তখন তোকো বলেন, ‘আমি কুলি বেছে নিয়েছি। কারণ, এটা দেখতে প্রকৃত কুকুরের মতো লাগে। চতুষ্পদ প্রাণী আমার খুব পছন্দ। আমি এটা ভেবেছিলাম যে বড় প্রাণী হলে আমার জন্য সুবিধা। তাই আমি কুকুরের আদলে পোশাক তৈরির সিদ্ধান্ত নিই। কুলির মধ্যে এসব থাকায় আমি কুলির মতো পোশাক তৈরি করতে চাই। আমার প্রিয় কুকুরের রূপ ধারণ করতে চাই।’
তোকোকে জিজ্ঞেস করা হয়, কুকুরের এই পোশাক পরে তিনি তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ইচ্ছেমতো নড়াচড়া করতে পারেন কি না? জবাবে তোকো বলেন, ‘অবাধে অঙ্গ নাড়াতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে ইচ্ছেমতো নাড়ানো যায়। আবার বেশি নড়াচড়া করলে সেটা কুকুরের মতো দেখাবে না।’
তোকোর শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আকারে বড়সড় লোমশ ‘কুকুর’টি একটি কক্ষে বসে আছে। প্রথমে সামনের ডান পা নাড়াচ্ছে (আদতে তোকোর ডান হাত), এরপর সামনের বাঁ পা নাড়াচ্ছে। একপর্যায়ে ‘প্রাণীটি’ আধশোয়া হচ্ছে, আলতোভাবে চিৎ হচ্ছে, একটু গড়াগড়ি খাওয়ার মতো ভঙ্গিমা করছে। পুরো সময় থেমে থেমে ‘কুকুর’টিকে একটু একটু করে মুখ খুলতে ও বন্ধ করতে দেখা গেছে।
তবে ভিডিওতে একটু খেয়াল করলেই দেখা যাচ্ছে, তোকোর গায়ে জড়ানো কুকুরের ওই পোশাকে যে চোখ লাগানো, তা দেখতে আসলের মতো নয়। ১ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে একবারের জন্যও ‘কুকুর’টিকে চোখের পলক ফেলতে দেখা যায়নি। আর কুকুরের বেশে থাকা তোকোর পুরো নড়াচড়া ছিল অনেকটা ভালুকের মতো।