সৌদি আরবে মুসলমানদের দুই পবিত্র মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালনকারী কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ‘স্ট্যাকড প্যানোরামিক ফোকাস’ পদ্ধতি ব্যবহার করে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদের অভ্যন্তরে পবিত্র কাবা ঘরের কালো পাথরের (হাজরে আসওয়াদ) ছবি প্রদর্শন করেছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ফোকাসের পয়েন্ট পরিবর্তন করে একই রকম অসংখ্য ছবি তুলে সেরা ছবিটি বেছে নেয়া হয়ে থাকে।
সিএনএন সহ অনেক প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিষয়টি গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে। বলা হচ্ছে- এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো কালো পাথরকে এতোটা স্পষ্টভাবে দেখতে পারবে বিশ্বের মানুষ। ধারণ করা ছবিগুলো এতোটাই স্পষ্ট যে পাথরের প্রতিটি অংশই এতো ভালোভাবে দেখা যাবে যা আগে কখনো দেখা যায় নি।
উল্লেখ্য, হাজরে আসওয়াদ (বাংলায় কালো পাথর) কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে মাতাফ থেকে দেড় মিটার (চার ফুট) উঁচুতে অবস্থিত। মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী এই পাথর আদম-হাওয়ার সময় বেহেশত থেকে পৃথিবীতে এসে পড়েছিল। রাসূল (সাঃ) ৬০৫ সালে এটি কাবার দেয়ালে স্থাপন করেছিলেন। বর্তমানে এটি একটি রূপার ফ্রেমে আটকানো অবস্থায় কাবার সাথে সংযুক্ত রয়েছে। এর রং গাঢ় কালো, লক্ষাধিক হাজির স্পর্শের কারণে যা মসৃণ আকার লাভ করেছে।
হজ্জ বা উমরাহ এর অংশ হিসেবে মুসলিমরা তাওয়াফ করে থাকেন যার শুরুতে হাজরে আসওয়াদে চুমু দেয়ার রীতি রয়েছে। রূপার ফ্রেমে মুখ ঢুকিয়ে হাজরে আসওয়াদে চুম্বন করতে হয়। এর পাশে ২৪ ঘণ্টা উপস্থিত থাকে সৌদি পুলিশ। তারা খেয়াল রাখেন, ফ্রেমে মাথা ঢোকাতে বা চুম্বন করতে কারও যেন কোন অসুবিধা না হয়। তবে চুমু দেয়া সম্ভব না হলে হাত ইশারা করে তাওয়াফ শুরু করা হয়।
হাদিসের গ্রন্থগুলোতে হাজরে আসওয়াদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রচুর আলোচনা এসেছে। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, ‘হাজরে আসওয়াদ একটি জান্নাতি পাথর, তার রং দুধের চেয়ে বেশি সাদা ছিল।এরপর বনি আদমের পাপরাশি এটিকে কালো বানিয়ে দিয়েছে’ (জামে তিরমিজি : ৮৭৭, মুসনাদে আহমাদ, ১/৩০৭, ৩২৯)। অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘হাজরে আসওয়াদ জান্নাতেরই একটি অংশ।’