বাংলাদেশ দূতাবাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম দেশ মিশরে বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। এই ১০ হাজারের মধ্যে কেউ এসেছেন জীবিকার খোজে।
কেউবা পড়াশুনার জন্য। এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি এবং ব্যবসা বাণিজ্যে জড়িয়ে গেছেন। অনেকে আবার ঘর সংসারও শুরু করেছেন দেশটিতে। ইতোমধ্যে দেশটিতে প্রায় কয়েকশত বাঙালি মিসরীয় মে’য়েকে বিয়ে করেছেন। এ সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।
এমনই একজন হচ্ছেন বরিশাল বাবুগঞ্জ থা’নার পূর্ব কেদারপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ হাওলাদারের ছে’লে প্রবাসী বাংলাদেশী সজল হাওলাদার। কঠোর পরিশ্রমী সজল ২০১০ সালে মিশরে আসেন জীবিকার খোঁজে।
আসার পর তিনি কায়রো শহরের আলমা’রজ, টেনথ রমা’দান সিটিসহ বিভিন্ন গু’রুত্বপূর্ণ শহরে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় তিন বছর চাকরি করেছেনে।
তারপর কায়রো শহরে ঘুরতে এসে পৃথিবীর বিখ্যাত হোসেন ম’সজিদের পাশে মিসরের সাবেক রাজধানী আলেকজান্দ্রিয়ার মেয়ের নোহার সাথে তার পরিচয় হয়।
সেই পরিচয় থেকে ধীরে ধীরে প্রে’ম, এবং তারও পর বিয়ে। পরবর্তীকালে সজল হাওলাদার সেই মিশরীয় রমনির হাত ধরে, তার সহযোগিতায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আলেকজান্দ্রিয়া শহরে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন একটি বাংলা রেস্টুরেন্ট।
লোহিত সাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে একটি সুন্দর এবং মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা এই রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশী সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়।পুরো মিশরজুড়ে তাদের এই রেস্টুরেন্টটি এরই মধ্যে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে। সেখানেই একদিন এই দম্পতির স’ঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।সজল ও তার স্ত্রী’ নোহার কাছে জানতে চেয়েছিলাম তাদের প্রে’ম ও বিয়ের কথা। নোহা বলেন, স’ম্পর্কটা আল্লাহ কখনো মানচিত্র দেখে নির্ধারণ করেন না।
কে বাঙালি, কে চায়নিজ- এসব কোন বি’ষয় নয়। আল্লাহ শুধু দেখেন আমা’দরে নফস। অন্তরের মিলের কারণেই স’ম্পর্ক তৈরি হয়। নিজেদের স’ম্পর্কের কথা বলতে যেয়ে নোহা জানান, মিশর ও বাংলাদেশ দুটি ভিন্ন দেশ ভিন্ন সংস্কৃতি হলেও আমা’দের মৌলিক মিলটি ছিল ধ’র্ম। আম’রা উভ’য়েই মু’সলিম।সেটাই আমা’দের স’ম্পর্কের মূল ভিত্তি।তিনি বলেন, আগে আমি বাংলাদেশ স’ম্পর্কে তেমন কিছুই জানতাম না। আমি তাকে (সজলকে) তার পরিষ্কার মনের কারণে ভালোবেসেছি।
আর এখন তাকে আমি স্বামী হিসাবে খুব ভালোবাসি।এর মাঝে নোহা বাংলাদেশেও এসেছেন। বাংলাদেশকে তিনি অ’ভিহিত করেছেন একটি ন্যাচারাল এবং জাদুকরি দেশ হিসাব।তার কাছে ভালো লেগেছে বাংলাদেশের শিক্ষা প’দ্ধতি। বিশেষ করে ছে’লেমে’য়েদের এক সাথে পাঠদানের বি’ষয়টি তাকে মুগ্ধ করেছে বলে জানান তিনি।বাংলাদেশী খাবারের মধ্যে নোহার প্রিয় হচ্ছে- পুই শাক, চিংড়ি মাছ ভর্তা, আলু ভর্তা, টমেটো ভর্তাসহ সব ধরনের ভর্তা।
মিশরে অবস্থানরত যে সকল বাংলাদেশী যুবক মিশরীয় নারীদের প্রতি আগ্রহী তাদের প্রতি একটি উপদেশ উচ্চারণ করেন নোহা।বলেন, এদেশে থাকা সমস্ত বাংলাদেশী পুরুষ এবং মিসরীয় নারীদেরকে আমি বলবো যদি তুমি আল্লাহকে ভয় করো, যদি গভীরভাবে প্রে’ম করতে পারো, তাহলে বিয়ে করো, আর যদি পরস্পরকে গভীরভাবে ভালবাসতে না পারো তাহলে বিয়ে করো না।কোন বাংলাদেশির যদি দেশেও বউ থাকে, আবার এখানেও বিয়ে করতে চায়,
তাহলে এই জুলুমটা যেন কোন দেশের নারীর উপর না হয়। আমি দূতাবাসের কাছে বলব তারা যেন