দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে ১৪ দিনের পূর্ণ শাটডাউনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কাজ করছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া সুপারিশ সক্রিয় বিবেচনায় নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেছেন, সরকার করোনা পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় যেকোনো সময় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি বুঝে যেকোনো সময় সারাদেশে ‘শাটডাউন’ ঘোষণার প্রস্তুতি সরকারের আছে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা তাদের সুপারিশ অ্যাকটিভ কনসিডারেশনে (সক্রিয় বিবেচনা) নেব। এটা কমানোর জন্য যেটা করা প্রয়োজন হবে আমরা সেটা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংক্রমণ যেহেতু বেড়ে যাচ্ছে, আমরা বিভিন্নভাবে তা কমানোর চেষ্টা করছি। স্থানীয়ভাবে বিধিনিষেধ দিচ্ছি, দিয়ে এটাকে কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে যেটা প্রয়োজন হবে সেটাই আমরা করব।’
‘যেহেতু সংক্রমণটা ঊর্ধ্বমুখী, দৈনিক সংক্রমণ ৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সরকার পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। সেক্ষেত্রে যেটি উপযুক্ত হবে, সেই সিদ্ধান্তই আমরা নেব।’
সরকার কতদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে—জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে যেকোনো সময় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
কী সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে—এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের সংক্রমণ ৭ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এখনো অনেক জায়গা আছে যেখানে সংক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে। আমরা চাইছি…ইতোমধ্যে ঢাকার আশপাশের এলাকাগুলোতে কঠোর বিধিনিষিধে দিয়েছি। তারপরও ঢাকার মধ্যে লোকজন এসে যাচ্ছে। এই যোগাযোগগুলো…। ইতোমধ্যে বাস, ট্রেন, যাত্রীবাহী নৌযান বন্ধ করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ করেই কিন্তু আমরা এ সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংক্রমণ কমাতে পদক্ষেপ নিতে আমাদের বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করছে। সেই অনুযায়ী যে সিদ্ধান্ত নেয়া উপযুক্ত এবং সঠিক হবে, সেটা আমরা নেব।’
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩ হাজার ৮৬৮ জনে।
একই সময়ে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ছয় হাজার ৫৮ জনের। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে আট লাখ ৭২ হাজার ৯৩৫ জনে দাঁড়াল। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।