বাবার কফিনের পাশে মায়ের আহাজারি, অপলকে ছোট্ট নূহা

বাড়িজুড়ে চলছে শোকের মাতম। স্বামীর কফিনের পাশে স্ত্রীর আহাজারি। আর সন্তান হারানোর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন বাবা-মা। কিন্তু দুই বছরের নূহা জানেই না তার বাবা আর কখনো ফিরবেন না। কফিনের দিকে অপলকে তাকিয়ে থাকলেও বাবা যে আর বেঁচে নেই- সেটি বোঝার বয়সও হয়নি তার। এ বয়সেই একটি বি;স্ফো;র;ণ চিরদিনের জন্য বাবার আদর থেকে বঞ্চিত করল ছোট্ট নূহাকে।

রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ হারান নূহার বাবা রুহুল আমিন নোমান। আর কয়েকদিন পর কোরবানি ঈদে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল নোমানের। কিন্তু এর আগেই বাড়ি ফিরেছে তার কফিনবন্দি লা;শ। মঙ্গলবার সকালে গ্রামের বাড়ির সরকারি কবরস্থানে তাকে দা;ফ;ন করা হয়।

নোমানের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি পৌর শহরের টিঅ্যান্ডটি পাড়ায়। তার বাবার নাম ডা. খয়বর আলী। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা-মা।

নোমান অনেক আগে থেকেই ঢাকার ধানমণ্ডির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করেন। পড়ালেখা শেষে ‘রহমান রহমান অ্যাসোসিয়েট’-এ চাকরি করতেন। প্রতিদিনের মতো রোববার সন্ধ্যায়ও মগবাজার চৌরাস্তার মোড় অফিস শেষে বিস্ফোরিত ওই ভবনের পাশের পথ দিয়ে মালিবাগের বাসায় ফিরছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণে ভবনের ছাদ ভেঙে অন্যদের মতো নোমানও ঘটনাস্থলেই নি;হ;ত হন।

প্রথমে নোমানের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাত লা;শ হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ম;র্গে ছিল। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মর্গে লা;শ শনাক্ত করেন নোমানের দুলাভাই মাহফুজুর রহমান।

তিনি বলেন, নোমান মগবাজার মোড়ে একটি আইটি ফার্মে চাকরি করতেন। স্ত্রী নাবিলা ও একমাত্র সন্তান নূহাকে নিয়ে মালিবাগে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার বাবা-মা গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। সবার ছোট হওয়ায় পরিবারের সবার খুব আদরের ছিলেন নোমান। তার মৃত্যুর খবর সহ্য করতে পারবে না ভেবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাবা-মা, বোন ও স্ত্রী;কে জানানো হয়নি। পরে নোমানের সহকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে গ্রামের বাড়িতে বাবা-মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী।

মাহফুজুর বলেন, ছোট্ট নূহা এখনো জানে না তার বাবা মারা গেছে। সে বারবার জিজ্ঞাসা করছে, তার আব্বু কখন বাসায় ফিরবে। বাবাকে না পেয়ে কান্নাকাটি করছে শি;শু;টি। রাতে বাবা বাসায় ফিরলেই ছুটে চলে যেতো কোলে। খু;ন;সু;টি;তে মেতে উঠতো বাবার সঙ্গে। কিন্তু আর কখনো বাবা ফিরবেন না। নূহাকে কোলে নিয়ে আদর করবেন না।

About reviewbd

Check Also

বাংলাদেশের ইলিশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কলকাতাবাসী

প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে শুক্রবার থেকে কলকাতার বাজারে আসতে শুরু করেছে বহুল প্রতীক্ষিত বাংলাদেশের ইলিশ। তবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *