চলমান বিধিনিষেধে শিল্প-কলকারখানা খোলার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ রাখছে না সরকার। আগামী ৫ই আগস্ট পর্যন্ত অন্য সবকিছুর সঙ্গে শিল্প-কলকারখানাও বন্ধ রাখতে হবে। গতকাল সচিবালয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে সভায়
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, বিভিন্ন বাহিনী-সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও করোনার টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করতে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সভায়
৫ই আগস্ট পর্যন্ত শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে চলমান লকডাউন আরও কঠোর করার ব্যাপারে সভা থেকে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়। এ ছাড়া আগামী ৭ই আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনার টিকাদান শুরু করার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ৫ই আগস্টের পর লকডাউন বাড়বে কিনা সে বিষয়ে সভায় কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, চলমান লকডাউন চলবেই। শিল্পপতিরা যে অনুরোধ করেছেন, তা গ্রহণ করতে পারছি না। মাঠের চিত্রে লকডাউন অনেকটাই ঢিলেঢালা হয়ে পড়েছে। তা জানানো হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে বলা হয়েছে। চলমান লকডাউন ৫ই আগস্ট পর্যন্ত। এর পর তা বাড়ানো হবে কিনা-জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এরপর বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকবে নাকি শিথিল করা হবে-সেই প্রশ্নে সরকার এখনই সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। আগামী সপ্তাহে আবারো পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ ছাড়া কারিগরি কমিটির পরামর্শও আমলে নেয়া হবে। আগামী ৫ই আগস্টের পর লকডাউন তুলে নেয়া হবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে গত সোমবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ধীরে ধীরে সব খোলা হবে। একবারে না।
ধাপে ধাপে সব খোলা হবে। এক সঙ্গে সব খোলা হবে না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সকলেই সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করা উচিত। আমরা তো এভাবে বাঁচতে পারবো না। আমাদের মাস্ক পরতে হবে, কাজও করতে হবে। আমাদের টিকার সংকট কেটে গেছে। এখন সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে। তাহলে কি অর্ধেক জনবল নিয়ে প্রথমদিকে অফিস খোলা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ এরকমই। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে ১লা থেকে ৭ই জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা ১৪ই জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২শে জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। এরপর ২৩শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত কঠোরতম বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।