প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের হাত ধরেই চলচ্চিত্রে আগমন চিত্রনায়িকা পরীমনির। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এর নেপথ্যে বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেন রাজ। যার মধ্যে অন্যতম হলো রাজের বাসায় পরীমনিকে থাকতে হবে।
রাজের বনানীর ভাড়া বাসায় থাকতে শুরু করেন পরীমনি। একই সঙ্গে তিন বছর ওই বাড়িতে রাজের সঙ্গে থাকতে বাধ্য হন নায়িকা পরীমনি। এক পর্যায়ে বাড়িতে ওঠেন রাজের স্ত্রী ইশরাত জাহান জুই। নিজের স্ত্রী এবং পরীমনিকে নিয়ে একই বাসায় থাকতে শুরু করেন রাজ।
২০১৪ সালের আগে থেকেই পরীমনির সঙ্গে রাজের যোগাযোগ ছিল। গত কয়েক বছরে রাজ কয়েকটি টেলিভিশন নাটক প্রযোজনা করেছেন। তবে রাজ-পরীমনির পরিচয় এবং দুজনের ঘনিষ্ঠতা ঠিক কীভাবে, কবে থেকে শুরু এ সম্পর্কে জানা যায়নি।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, পরীমনি ২০১৬ সাল হতে অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। তার ফ্ল্যাট হতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করে থাকেন। মাত্রাতিরিক্ত সেবনের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে বাসায় একটি মিনি বার স্থাপন করেছেন। মিনি বার থাকায় তার ফ্ল্যাটে ঘরোয়া পার্টি অয়োজন পরিপূর্ণতা পেত বলে তিনি জানান। গ্রেফতারকৃত মো. নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করতেন।
পরীমনির প্রথম সিনেমা ‘ভালোবাসা সীমাহীন’ হলেও ‘রানা প্লাজা’ তার আলোচিত সিনেমা। এই সিনেমায় রেশমা চরিত্রে অভিনয় করেই আলোচনায় আসেন পরীমনি। যদিও সিনেমাটি গত ৭ বছরেও মুক্তি পায়নি। সিনেমাটি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে রয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। সাভারের রানা প্লাজা ভবন ধ্বসের ঘটনা উপজীব্য করে সিনেমাটি নির্মাণ করেন পরিচালক নজরুল ইসলাম খান। গণমাধ্যমে তিনি বলেছেন এই সিনেমায় অভিনয়ের ব্যাপারে নজরুল ইসলাম রাজ পরীমনির নাম প্রস্তাব করেছিলেন।
পরীমনিকে চলচ্চিত্রে আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল প্রযোজক রাজের। বনানীতে পরীমনি যে ফ্ল্যাটে বসবাস করেন সেই ফ্ল্যাটটি রাজ তাকে কিনে দেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজ জানিয়েছেন, বিখ্যাত একটি ম্যাগাজিনে পরীমনির ছবি আসার পেছনে জোর লবিং করেছিলেন তিনি। ওই ম্যাগাজিনে তার নাম আসার পর পরীমনি দেশে ও বিদেশের মিডিয়ায় নতুনভাবে আলোচনায় আসেন।
সূত্র জানায়, প্রযোজক রাজের নেতৃত্ব রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট নিজেদের স্বার্থে পরীমনিকে ব্যবহার করেছে। বিনিময়ে পরীমনিকে খ্যাতি ও অর্থের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এ রকম অন্তত দুই শতাধিক মডেল-নায়িকাকে নিজের কবজায় রেখেছেন রাজ। তিনি সুযোগ মতো তাদের কাজে লাগিয়ে স্বার্থ হাসিল করেন।