লোভ মানুষকে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে অসৎ উপায় অবলম্বন করতে প্ররোচিত করে। তখন যা নিজের নয়, যা পাওয়ার অধিকার তার নেই, তা পাওয়ার জন্য মানুষ লোভী হয়ে ওঠে। তখন সে তার অন্যায় ইচ্ছাকে সার্থক করে তুলতে চায়। লোভের মোহে পড়ে সে সত্য-মিথ্যা ভালোমন্দ সব বিসর্জন দেয়। তার ন্যায়-অন্যায় বোধ লোপ পায়। নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার অন্যায় ইচ্ছায় সে পাপের পথে ধাবিত হয়ে অন্যের সর্বনাশ ডেকে আনে। ঠিক এমনই ভাবসম্প্রসারনের মত সায়মা (২০) নামের এক গৃহকর্মী নিজ মালিকের বাসায় লোভে পরে চুরি করে।
সায়মা বয়স ২০ এর কোঠায়। পুরো নাম সায়মা আক্তার। কাজ করতো মিরপুরের বসতী হাউজিং এর একটি বাসায়। গত ২৫ মে ওই বাসা থেকে স্বর্ণসহ প্রায় চার লাখ টাকার মালামাল নিয়ে তিনি পালিয়ে যান। এরপর চুরি করা স্বর্ণ ঢাকা ও কিশোরগঞ্জের তিনটি দোকানে বিক্রি করেন। সেই টাকার একটি অংশ দিয়ে মাকে নিয়ে গত তিন মাস দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান।
ভুক্তভোগী গৃহকর্তী মে মাসেই থানায় প্রথমে অভিযোগ পরে মামলা করেন। মামলার পর থেকেই পুলিশ হণ্য হয়ে সায়মাকে তার জেলা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে খুঁজতে থাকে। সায়মা থেকে যায় ধরাছোয়ার বাহিরে। নিজের ব্যবহৃত মোবাইলের সীম বন্ধ করে মোবাইলই পরিবর্তন করে ফেলে। তবে থেমে থাকেনি পুলিশ। অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (২১শে সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জ থেকে সায়মা আক্তার (২০) ও তাঁর মা আছমা আক্তারকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারে সহযোগীতা করেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানার চৌকশ পুলিশের টিম। পরে ঢাকা থেকে এসআই আল-আমিনের নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জের কাটিয়াদি থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
তাদের কাছ থেকে চুরি করা স্বর্ণ, নগদ টাকা ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন।
তিনি জানান, সায়মাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন গণমাধ্যমকে বলেন, চুরির কিছু টাকা দিয়ে সায়মা তাঁর খালাকে বাড়ি করে দেন। এরপর মা-মেয়ে কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা ও সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখেন।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের পশ্চিম আবদুল্লাহপুরের মামাবাড়ি থেকে সায়মাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই থানার লক্ষ্মীপুর কোনারবাড়ী থেকে তাঁর মা আছমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে একটি সোনার চেইন, চুরি করা স্বর্ণ বিক্রির টাকা থেকে ৫৯ হাজার টাকা ও অন্যান্য জিনিস উদ্ধার করা হয়। আজ আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।