কৃমি মানুষের দেহে বাস করে এবং শরীর থেকে খাবার গ্রহণ করে বেঁচে থাকে ও বংশ বৃদ্ধি করে। কৃমি দূর করতে হলে প্রথমেই জানা দরকার এটি কেন হয়? নোংরা পরিবেশ, অনিরাপদ পানি পান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, খালি পায়ে হাঁটা কৃমি সংক্রমণের জন্য দায়ী।
হঠাৎ হঠাৎ পেটে ব্যথা বা মাথার যন্ত্রণা। কিন্তু চিকিৎসকের কাছে যেতেই তিনি বলে দিচ্ছেন তেমন কিছুই হয়নি আপনার। সারাদিন শরীরে অ্স্বস্তি বোধ লেগেই রয়েছে। এটার কারণ একটাই হতে পারে, আর সেটা হল কৃমি। ওষুধ নয়, কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতেই কৃমি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আসুন জেনে নেই যে ৮টি প্রাকৃতিক উপাদান কৃমি থেকে মুক্তি দেয়।
১. রসুন
রসুন অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক খাবার যা কৃমি দূর করতে সাহায্য করে। কাঁচা রসুনের অ্যামাইনো অ্যাসিড পেটের কৃমি মেরে ফেলে। প্রতি দিন সকালে খালি পেটে দু’কোয়া রসুন খান। আধ কাপ জলে দু’টি রসুনের কোয়া দিয়ে সিদ্ধ করে এক সপ্তাহ নিয়মিত খেলেও উপকার পাবেন।
২. নারকেল
কৃমি দূর করতে নারকেল বেশ কার্যকরী। প্রতি দিন সকালে এক টেবল-চামচ নারকেল কুচি খান। ৩ ঘণ্টা পর এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে দুই টেবল-চামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে খান।
৩. লবঙ্গ
প্রতিদিন ১ থেকে ২টি লবঙ্গ খান। এর অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান পেটের কৃমি ধ্বংস করে দিয়ে থাকে। এটি শুধু পেটের কৃমি নয় কৃমির ডিমও ধ্বংস করে দেয়।
৪. মিষ্টি কুমড়োর বীজ
দুই টেবল-চামচ মিষ্টি কুমড়োর বীজের গুঁড়ো তিন কাপ জলে আধ ঘণ্টা সিদ্ধ করুন। সকালে খালি পেটে এক সপ্তাহ খান। এ ছাড়া এক টেবল-চামচ মিষ্টি কুমড়োর বীজের গুঁড়োর সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়েও খেতে পারেন।
৫. গাজর
একটি গাজর কুচি করে প্রতি দিন সকালে খালি পেটে খান। গাজরের বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি এবং জিঙ্ক কৃমি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
৬. হলুদ
এক চা চামচ কাঁচা হলুদের রসের সঙ্গে সামান্য নুন মিশিয়ে নিন। এটি প্রতি দিন সকালে খালি পেটে খান। এ ছাড়া হাফ কাপ গরম জলে, সামান্য হলুদ গুঁড়ো এবং নুন মিশিয়ে খান। পাঁচ দিন নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন।
৭. অ্যাপল সিডার ভিনিগার
খাওয়ার আগে অ্যাপল সিডার ভিনিগার পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। যা শরীরে প্যারাসাইট ও জীবাণুর লার্ভা মারতে সাহায্য করে।
৮. আনারস
আনারসের মধ্যে রয়েছে ব্রোমেলিন এনজাইম। যা প্যারাসাইট মারতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে টানা তিন-চার দিন শুধু আনারস খেয়ে থাকলে কৃমি সম্পূর্ণ সারানো যায়।
প্রাকৃতিক উপায়ে কাজ না হলে
প্রতি তিন মাস পরপর পরিবারের সবাই একটি করে অ্যালবেনডাজল বড়ি সেবন করতে পারেন। মেবেনডাজল হলে খেতে হবে পরপর তিন দিন। সাত দিন পর আরেকটা ডোজ খাওয়া যায়। শিশুদেরও একইভাবে সিরাপ খাওয়াতে হবে। দুই বছরের নিচে কোনো শিশুকে খাওয়াতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।