মাটির ইট দিয়ে তৈরি বাড়ির অভ্যন্তরটি ছিল শীতল, পরিষ্কার এবং শান্ত। শামসুল্লাহ নামে একজন, যার পাশে বসেছিল একটি ছেলে। মারজাহ গ্রামে থাকেন ২৪ বছর বয়সী শামসুল্লাহ। দরিদ্র পরিবার শামসুল্লাহর। তার পরিবারের সদস্য বলতে আছেন মা, ছোট ছেলে এবং স্ত্রী। তবে শামসুল্লাহর স্ত্রী তার আগের চার ভাইয়েরও স্ত্রী ছিলেন। আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশের মারজাহ গ্রামটি গত ২০ বছরে সম্পূর্ণভাবে একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এই গ্রামের অধিবাসীরাও এখন ভুগছে চরম দারিদ্র্য এবং বাস্তবতায়। সম্প্রতি এই পরিবারের চিত্র নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। শামসুল্লাহ নামের ওই যুবক নিজের ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করেছেন।
শামসুল্লার মা গোলিজুমা জানান, তার বড় ছেলে জিয়া-উল হক মারা যায় ১১ বছর আগে। সে তালেবানের যোদ্ধা ছিল। তারপরের তিন ছেলে মারা যায় ২০১৪ সালে, মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে। মেজ ছেলে কুদরাতুল্লাহ মারা যায় এক বিমান হামলায়। তার পরের দুই ভাই হায়াতোল্লাহ এবং আমিনুল্লাহকে পুলিশ বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। শামসুল্লাহ জানান তার ঐ দুই ভাইকে জোর করে আফগান সেনাবাহিনীতে নাম লেখানো হয়েছিল। লড়াইয়ে তাদের মৃত্যু হতে সময় লাগেনি।
স্ত্রীর বিষয়ে শামসুল্লাহ বলেন, এখন আমার অন্যতম দায়িত্ব হলো আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে দেখভাল করা। আসলে আমার সবচেয়ে বড় ভাই যখন মারা যায় তার বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করেন আমার মেজ ভাই। যখন ঐ ভাই মারা যায় তখন পরের ভাইটি তাকে বিয়ে করেন। যখন আমার সেজ সেই ভাইটিও মারা যায় তখন তার পরের ভাই আমার বড় ভাবিকে বিয়ে করেন। সেই ভাইও মারা গেলে তাকে আমি বিয়ে করি।
এই পরিবারটি তালেবানের একনিষ্ঠ সমর্থক। তালেবান ক্ষমতায় আসায় তারা খুশি ও যথেষ্ট সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। গোলিজুমা বলেন, আমার বড় ছেলে তালেবানে যোগ দিয়েছিল, কারণ সে মনে করতো আমেরিকানরা আমাদের দেশ এবং ইসলামকে ধ্বংস করে দেবে। গোলিজুমা বলেন, ২০ বছর ধরে আফগান নেতারা আমাদের স্বামীদের, ছেলেদের, ভাইয়েদের হত্যা করে গেছে। গোটা দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। তাদের সময়ে অসংখ্য মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। আমি তালেবানকে পছন্দ করি কারণ তারা ইসলামকে সম্মান করে।