মোচা খেতে খুবই সুস্বাদু, পুষ্টিতেও অতুলনীয়। কলাতে যে সকল পুষ্টি উপাদান থাকে সেগুলো তো থাকেই। তা ছাড়াও মোচাতে থাকে মেন্থলের নির্যাস, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। থাকে ফেনলিক অ্যাসিডও। মোচার চপ, মোচার কালিয়া, মোচার ঘন্ট, এইসব পাতে পড়লে গরম গরম ভাত দিয়েই খেয়ে ফেলা যায় নিমেষে। মোচা দিয়ে বানানো যেকোনও রেসিপি যেমন সুস্বাদু, তেমনি মোচার গুণাবলীর তালিকা শুনলেও অবাক হবেন।
প্রতি ১০০ গ্রাম মোচায় রয়েছে – ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন বি সিক্স, ভিটামিন ‘সি’ ৪২০ মিগ্রা, ভিটামিন ই, প্রোটিন ১.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩২ মিগ্রা, ফসফরাস ৪২ মিগ্রা, লৌহ ১.৬ মিগ্রা, ফ্যাট ০.৭ গ্রাম, পটাশিয়াম ১৮৫ মিগ্রা, কার্বোহাইড্রেট ৫.১ গ্রাম, রিবোফ্লেবিন .০২মিগ্রা, আঁশ ১.৩ গ্রাম, থায়ামিন .০৫ মিগ্রা।প্রচুর আয়রন ও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কলার মোচা সুস্বাস্থ্যের সবজি হিসেবে যেমন উপকারী একই সাথে এর ভর্তা মুখরোচক একটি খাবারও। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই কলার মোচা জনপ্রিয় একটি খাবার। আবার এটি যেমন উপকারী আবার কিনতেও পাওয়া যায় সূলভ মূল্যে!
কী কী উপকার হয়?
রজঃচক্র স্বাভাবিক রাখা : কলার ফুল রজঃকালীন ব্যথা কমায়। এটি প্রোজেস্টেরন উৎপাদন বৃদ্ধি করে রক্তাল্পতা কমায়।
ওভারিয়ান সিন্ড্রোম : পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন – কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে ফোলাভাব বিশেষ করে ‘পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম’ (পিসিওএস) নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মন ভালো রাখতে : মোচাতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, উদ্বেগ ও হতাশা কমায়। মন মেজাজ ভালো রাখে।
ডায়াবেটিস : মোচার ফেনলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
হজমে ও কোষ্ঠকাঠিন্যে : মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আঁশ পাওয়া যায়, এটি হজম শক্তি বাড়ায়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ কমায় : কলার মোচায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উন্মুক্ত ‘রেডিকল’য়ের বিরুদ্ধে কাজ করে। জারণ ক্ষয় প্রতিহত করে এবং হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
ডায়াবেটিসেও উপকার : ডায়াবেটিসের সঙ্গে খাবারের পরীক্ষায় বাদ যায়নি কলার মোচাও। এতে আছে ফেনলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য ‘বায়োঅ্যাক্টিভ’, যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
ক্যান্সার, হৃদরোগ প্রতিরোধ : কলার মোচায় থাকা ফেনোলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, ফ্লেভানয়েড ও নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি-র্যাডিকেল ধ্বংস করে। এতে ক্যান্সার প্রতিরোধের পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডও থাকে ঝুঁকিমুক্ত।
ত্বকের জন্য : কলার মোচা অকালে বৃদ্ধ হওয়া ও বয়সের ছাপ পড়া ধীর করে। এছাড়া ত্বকের গঠন উন্নত করে বলিরেখা কমায়।