আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার পূর্বে নির্ধারিত পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে আরও ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার সকাল সোয়া ১০টায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইসমাঈলের আদালতে ২০তম সাক্ষী বেবি বেগমের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলে আদালতের কার্যক্রম।
এ সময় বেবি বেগম আদালতকে বলেন, ওসি প্রদীপ ও তার বাহিনী ২০২০ সালে আমার কিশোরী কন্যাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর দীর্ঘদিন থানার দ্বিতীয়তলায় আটকে রেখে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে ওসি প্রদীপ। ওই সময় ছাড়া পেয়ে মেয়ে বাড়ি ফিরে আসলে কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
প্রশাসন ওসি প্রদীপের পক্ষে থাকায় মামলা করার সাহস পাননি দাবি করে বেবি বেগম বলেন, মেজর সিনহা হত্যা মামলার পর তিনি সাহস পেয়ে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা করেছেন।
রোববার বেবি বেগম ছাড়াও সেনা কর্মকর্তা লে. আরেফিন, করপোরাল নুর আহমদ, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার সৈয়দ মঈন ও রুহুল আমিন এবং লেন্স করপোরাল আবু জাফর আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে তাদের আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন।
সেনা সদস্যরা সবাই মেজর সিনহা হত্যার রাতে সেনা সদস্যদের সঙ্গে ওসি প্রদীপের দুর্ব্যবহার ও মেজর সিনহা হত্যাকে পরিকল্পিতভাবে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন।
মেজর সিনহা হত্যা মামলা বিচারকাজে যুক্ত একাধিক আইনজীবী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজনভ্যানে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল আলম বলেন, মামলায় সাক্ষ্যদানের জন্য ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৯ জনকে আদালত নোটিশ দিয়েছেন। গত ২৩ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ২৫ জনের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রোববার পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৯ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত থাকলেও ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পেরেছেন আদালত।
৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে মেজর সিনহা নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পর গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।