কুমিল্লায় মণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখার দায়ে অভিযুক্ত ইকবালের আরও একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। যমুনা নিউজের হাতে আসা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, চকোরিয়ার এক মসজিদে মাঝরাতে আজান দেয়ার সময় ধরা পড়ে ইকবাল। তার কাছে গামছায় পেঁচানো একটি পবিত্র কুরআন শরিফ পাওয়া যায়।
রাত আড়াইটায় কক্সবাজারের চকোরিয়ায় সবুজ পাহাড় মসজিদের মিম্বরে উঠে আজান দিচ্ছিলেন ইকবাল। আজান শুনে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। তখন স্থানীয়রা পরিচয় ও ঠিকানা জানতে চাইলে ইকবাল জানান, তার বাড়ি কুমিল্লায়। গন্তব্য কক্সবাজার। সেখানে গিয়ে হোটেলে চাকরি করবে সে। পরে স্থানীয়রা গামছা ও কোরআন রেখে একটি শার্ট দিয়ে কক্সবাজারের গাড়িতে তুলে দেয় তাকে। ধরা পড়ার সময়ও তার গায়ে ওই শার্টটি ছিল।
এদিকে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবালসহ চার আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার বিকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক আব্দুল হাকিম আসামিদের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা সুলতানা পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল, ইকরাম হোসেন, মাজারের খাদেম হুমায়ুন আহমেদ ও ফয়সাল আহমেদ। এর আগে শুক্রবার দুপুরে ওই চার আসামিকে আদালতে হাজির করে তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
গত শনিবার এ মামলায় ইকবালসহ চারজনকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মিথিলা জাহান নিপার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দীঘিরপাড় এলাকায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার খবরে নগরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং এ ঘটনায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, মন্দির ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
গত ২১ অক্টোবর রাতে কক্সবাজার থেকে ইকবালকে আটক করে পুলিশ। আটকের আগেই মণ্ডপে পবিত্র কুরআন রাখার প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভি ভিডিও ভাইরাল হলে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে ইকবাল। শুরু থেকেই তার পরিবারের দাবি মাদকাসক্ত ইকবাল। প্রতিবেশীরাও তার সম্পর্কে জানে না ভালো করে। পেশায় একজন রংমিস্ত্রি তিনি।
ইকবালের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় আছে কিনা, তা জানা যায়নি। কেন সে এমন ঘৃণ্য কাজ করলো তা জিজ্ঞাসাবাদের পরই বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।