কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে মায়ের পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় মেয়েকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়নের চর দেহুন্দা গ্রামে বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মা স্বপ্না আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত মাইশা ভাটিয়া বাজার কওমী মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা বাবুল মিয়া ঢাকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে নৈশ প্রহরীর চাকরি করেন।
জানা যায়, স্বপ্নার স্বামী বাবুল মিয়া ঢাকায় থাকেন। এ সুযোগে ফাইজুলের সঙ্গে স্বপ্নার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকবার দেন-দরবারও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত বুধবার মাদ্রাসা থেকে ছুটি নিয়ে মায়ের কাছে আসে মাইশা। রাতেই তার মা স্বপ্না আক্তার এবং প্রেমিক ফাইজুল মিলে মাইশাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
করিমগঞ্জ থানার ওসি শামসুল আলম সিদ্দিকী জানান, উপজেলার চরদেহুন্দা গ্রামের বাবুল মিয়ার স্ত্রী স্বপ্না আক্তারের সঙ্গে ফাইজুল নামে এক ব্যক্তির দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার ভোররাতে ফাইজুল স্বপ্নার বাড়িতে এসে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এ সময় মেয়ে মাইশা আক্তার তাদের দু’জনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে প্রতিবাদ করলে প্রেমিকের সহযোগিতায় মাইশাকে গলাটিপে হত্যা করে মা স্বপ্না আক্তার। ঘটনার পর মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যান ফাইজুল।
বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে নিজ ঘর থেকে মাইশার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মাইশার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর পাশাপাশি আটক করা হয় তার মা স্বপ্না বেগমকে। শামছুল আলম সিদ্দিকী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খুনের ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, স্বপ্না বেগমের সঙ্গে তার খালাতো ভাই ফাইজুলের পরকীয়া সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণেই মা এবং তার প্রেমিক মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে গ্রেফতারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্বপ্না বেগম দাবি করেন, মেয়ে মাইশার সঙ্গে ফাইজুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং অনেকবার সতর্ক করার পরও মাইশা এ সম্পর্ক বজায় রাখায় তিনি তার মেয়েকে হত্যা করেছেন।