বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত। নেই কোনো ধরনের সংকট। চাহিদামতো পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু রাজধানীর খুচরা বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ ক্রেতাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি ক্রয়ে আবারও বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে।
পেঁয়াজের পাশাপাশি সপ্তাহ ব্যবধানে ভোজ্যতেল, আলু, হলুদ, মরিচ, আদা ও ময়দার দাম বেড়েছে। রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার ও রামপুরা বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, সাত দিন আগে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৬০ টাকা, যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। পাশাপাশি প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০ টাকা।
রাজধানীর কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা শাকিল বলেন, বাজারে আবারও পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। কিছুদিন পরপর এ পণ্যটির দাম নিয়ে বিক্রেতারা কারসাজি করে। আবারও যাতে পণ্যটি নিয়ে কারসাজি না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজর দিতে হবে। এমনিতেই অন্যান্য পণ্যের বাড়তি দাম নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
দামবৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কাওরান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. আশরাফ যুগান্তরকে বলেন, পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে কিছুটা সংকট থাকলেও এখন পর্যাপ্ত ট্রাক আসায় সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু ডিজেলের দাম সমন্বয় করতে ট্রাক চালককে ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। যেখানে প্রতি ট্রাক ভাড়া ১৪শ থেকে ১৬শ টাকা গুনতে হতো, এখন গুনতে হচ্ছে ১৭শ-১৯শ টাকা। পরিবহণ খরচ বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের ওপর প্রভাব পড়েছে। বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দরে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক সংকর চন্দ্র ঘোষ যুগান্তরকে বলেন, মূলত দেশি পেঁয়াজ শেষের দিকে। তারপরও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আসায় সংকট নেই। পাশাপাশি দেশে মাঠ থেকে নতুন পেঁয়াজ কিছুদিন পর বাজারে আসবে। সব মিলে পেঁয়াজ নিয়ে কোনো চিন্তার কারণ নেই। কিন্তু চিন্তা বাড়াচ্ছে পরিবহণ খরচ। পরিবহণ ভাড়া বাড়লে স্বাভাবিক ভাবে পণ্যের দামের ওপর প্রভাব পড়ে। কারণ বন্দর থেকে প্রতি ট্রাক পণ্য ঢাকায় আনতে খরচ হতো প্রায় ৩০ হাজার টাকা, যা এখন ৩৮-৪০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। প্রতি গাড়িতে ৮-১০ হাজার টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু পেঁয়াজের দামে নয়, পরিবহণ ভাড়া বাড়ায় সব ধরনের পণ্যের দাম এভাবে বেড়ে যাবে।
এদিকে পেঁয়াজের পাশাপাশি রাজধানীর খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে। প্রতি লিটার পাম অয়েল সুপার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৩২-১৩৮ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৬ টাকা, যা আগে ছিল ৪২-৪৫ টাকা।
প্যাকেটজাত প্রতি কেজি ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪৫-৫০ টাকা। আমদানি করা শুকনা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ২৮০ টাকা। আমদানি করা হলুদ প্রতি কেজি মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৯০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০-১৮০। প্রতি কেজি দেশি নতুন আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ১২০ টাকা। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ টাকা, যা আগে ছিল ২৫-২৬ টাকা।