গাজীপুরের মহানগরীর টঙ্গীর তারগাছ এলাকায় মেলা থেকে ঘুরে এসে স্ত্রীকে ছাদে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে স্বামী। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে নগরীর ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ঘাতক স্বামী সুজন মিয়া পালিয়ে যায়।
তিনি নিহতের বোনের মোবাইলে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি নিজেও শেষ, ওরেও শেষ করে দিছি’।
হত্যাকাণ্ডের স্বীকার জুয়েনা আক্তার জোনাকি (২১) সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারা বাজার থানার সুরিগাঁও গ্রামের রাকির আলীর মেয়ে। পরিবারের সঙ্গে তারগাছ এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে তিনি অনন্ত ক্যাজুয়াল গার্মেন্টে হেলপার পদে চাকরি করতেন।
বড় বোন রোজিনা জানান, প্রেম করে তিন বছর আগে সুজনের সঙ্গে তার বোন জুয়েনার বিয়ে হয়। সুজনের বাড়ি ময়মনসিংহে। পেশায় তিনি রড মিস্ত্রি। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে কলহ চলছিল।
রোজিনা আরো জানান, শুক্রবার বিকেলে স্ত্রী জুয়েনাকে নিয়ে স্থানীয় টঙ্গীর নিলয় এলাকায় মেলায় ঘুরতে যায় সুজন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফিরে জুয়েনাকে ভাড়া বাসার ছাদে নিয়ে যায় সুজন। সেখানে ধারাল ছুরি দিয়ে জুয়েনাকে গলা কেটে জখম করে পালিয়ে যায় সে। রক্তাক্ত অবস্থায় জুয়েনা ছাদ থেকে হামাগুড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসে। তারপর তারা তাকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর সুজনকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেন এলাকাবাসী।
বোনের মৃত্যুর সংবাদ গোপন করে সুজনকে ফোন দেয় রোজিনা। এ সময় সুজন জানায়, ‘আপা আমি রাজেন্দ্রপুর আছি। আমাকে মাফ করে দিয়েন। আর এক ঘণ্টার মতো আছি। আমি নিজেও শেষ, ওরেও শেষ করে দিছি। ও বাইচা থাকলে থাক, না থাকলে আমারে মাফ করে দিয়েন’।
জুয়েনার বাবা রাকিব আলী বলেন, সুজন নেশা করত। সন্ধ্যায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তার মেয়েকে ছাদে নিয়ে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা জোনের সহকারী কমিশনার আহসান হক জানান, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুর মর্গে পাঠানো হচ্ছে।