নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের দেউলা গ্রামে এক গৃহবধূর সঙ্গে প্রেমিক যুবককে আটক করে গ্রামবাসী। গত ১৯ নভেম্বর রাতে সবুজ ওই গৃহবধূর বাড়িতে গেলে তাদের দু’জনকে আটক করে গ্রামবাসী। তাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে সালিশ ডাকা হয়। সালিশে ইউপি মেম্বার ও মাতবররা সিদ্ধান্ত দেন, শাস্তি হিসেবে গ্রামবাসীকে এক সন্ধ্যায় ভূরিভোজ করাবেন ওই প্রেমিক যুগল। এজন্য খরচ বাবদ আড়াই লাখ টাকা জরিমানা দেবেন তারা। এর মধ্যে প্রেমিক দেবেন দেড় লাখ টাকা, আর প্রেমিকা দেবেন বাকি এক লাখ।
সালিশে তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকা পরিশোধ করেন প্রেমিক। তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকা আদায়ের পর বাকি টাকা পরিশোধের জন্য প্রেমিক-প্রেমিকাকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। তবে সেই টাকা দিতে না পেরে ওই রাতে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান তারা।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, জরিমানার বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী এবং সবুজের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন মাতবররা। এতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সবুজের দাবি, ওই গৃহবধূর সঙ্গে তাকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে গ্রামবাসী। সালিশে তাকে অন্যায়ভাবে জরিমানা করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তাৎক্ষণিক তিনি এক লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন।
অন্যদিকে গৃহবধূর ভাষ্য, বিয়ের পর থেকে তিনি সংসার জীবনে সুখী নন। স্বামীর পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় প্রতিবেশী সবুজের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি। তারা বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এই সম্পর্কের কথা কয়েকজন মাতবর জেনে যান। এরপর মিথ্যা অভিযোগ তুলে সবুজ ও তাকে জিম্মি করে জরিমানা করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি মেম্বার অনিমেষ চন্দ্র সরকার বলেন, সালিশে গ্রামবাসী শাস্তির ওই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমরা তা বাস্তবায়ন করছি। রানীনগর থানার ওসি শাহিন আকন্দ বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।