পুলিশ বাহিনীতে নিজ যোগ্যতায় কনস্টেবল পদে চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ন হলেও ভুমিহীন হওয়ায় চাকুরি না পাওয়ায় আসপিয়া ইসলাম কাজল নামে বরিশালের ওই তরুণীকে শ্রীপুরের এক ব্যবসায়ী যুবক জমি লিখে দিতে চান। জমি দিতে ইচ্ছুক ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. মেজবাহ উদ্দিন। তিনি শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের মৃত কফিল উদ্দিন মেম্বারের ছেলে।
জানা গেছে, সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেছেন আসপিয়া ইসলাম। ১৫ বছর ধরে উপজেলার খুন্না-গোবিন্দপুর গ্রামের একজনের জমিতে আশ্রিত হিসেবে থাকছে তার পরিবার। বাবা সফিকুল ইসলাম মারা গেছেন। পরিবারে মা, তিন বোন ও এক ভাই। ভাই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার আয় দিয়েই চলে সংসার।
আসপিয়া জানান, বরিশাল জেলায় পুলিশ কনস্টেবলের শূন্য পদে লোক নিতে সেপ্টেম্বরে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। অনলাইনে আবেদন করলে গত ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর জেলা পুলিশ লাইনে শারীরিক যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলেও উত্তীর্ণ হন। ২৪ নভেম্বর একই স্থানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম হন আসপিয়া। ২৬ নভেম্বর জেলা পুলিশ লাইনে চিকিৎসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এতেও উত্তীর্ণ হন। সবশেষ ২৯ নভেম্বর মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। সেখানেও উতরে যান আসপিয়া।
চূড়ান্ত নিয়োগের আগে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আসপিয়া ও তার পরিবারকে ‘ভূমিহীন’ উল্লেখ করা হয়। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার বরাবর প্রতিবেদন জমা দেন হিজলা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আব্বাস। এর আগে ভূমিহীন হওয়ায় (স্থায়ী ঠিকানা না থাকায়) আসপিয়ার চাকরি হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
নিজ যোগ্যতার বাংলাদেশ পুলিশী নিয়োগে ৭টি দাপ পেরিয়ে উত্তীর্ণ হলেও এক খণ্ড জমির জন্য চাকুরী না পাওয়ার খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে পরে মেজবাহ উদ্দিনের। এরপর বিডি২৪লাইভ-এর কাছে ওই তরুণীর নামে জমি লিখে দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন মেজবাহ। তিনি জানান, আসপিয়ার নামে জমি লিখে দিলে যদি চাকুরী পায় তাহলে আমি জমি লিখে দিবো। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্বর্তন কতৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।