উসাইদ ইবনে হুজাইর (রা.) মদিনার বিখ্যাত আউস গোত্রের বনু আবদুল আশহাল শাখার সন্তান ও সর্দার ছিলেন। বাইআতে আকাবায় অংশগ্রহণকারী এবং রাসুল (সা.)-এর মনোনীত ১২ নাকিবের একজন। রাসুল (সা.) তাঁকে তাঁর বনু আবদুল আশহাল গোত্রের নাকিব নিযুক্ত করেন। (উসদুল গাবাহ ১/১১১-১১২, আল-ইসতিআব ১/৯৩)
তিনি মদিনায় রাসুল (সা.)-এর প্রতিনিধি মুসআব ইবনে উমাইর (রা.)-এর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর কৌশলে সাআদ ইবনে মুআজ (রা.) মুসআব (রা.)-এর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন।
তিনি সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তবে ইবনে ইসহাক ও ইবনে কালবি (রহ.)-এর মতে, বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। বাইতুল মুকাদ্দাস বিজয় অভিযানে ওমর (রা.)-এর সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন।
তাঁর থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন কাব ইবনে মালিক, আবু সাইদ খুদরি (রা.), আনাস ইবনে মালিক (রা.) ও আয়েশা (রা.)।
তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল সুমধুর। তাঁর কোরআন তিলাওয়াতে ছিল বিশেষ আকর্ষণ। ফেরেশতারা পর্যন্ত তাঁর তিলাওয়াত শোনার জন্য ভিড় জমাতেন। এক রাতে তিনি তিলাওয়াত করছিলেন, হঠাৎ তাঁর অদূরে বেঁধে রাখা ঘোড়াটি লাফঝাঁপ দিতে লাগল। এর কাছাকাছিতে ছিল তাঁর পুত্র ইয়াহইয়া। আশঙ্কা করলেন, ঘোড়াটা লাফিয়ে না জানি ইয়াহইয়ার গায়ে পড়ে। তাই তিনি তিলাওয়াত বন্ধ করে ইয়াহইয়াকে সরাতে গেলেন।
ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখলেন, মেঘখণ্ডের মতো কিছু, যাতে আছে অসংখ্য বাতি। সকালে এসে রাসুল (সা.)-কে বিস্তারিত বলেন। তিনি ইরশাদ করলেন, ‘আরে উসাইদ! তুমি পড়তে থাকতে। এটা তো ফেরেশতার ঝাঁক। তারা তোমার তিলাওয়াত শোনার জন্য আকাশ থেকে নেমে এসেছে। যদি তুমি সকাল পর্যন্ত তিলাওয়াত অব্যাহত রাখতে, তবে এই ফেরেশতারাও সকাল পর্যন্ত এভাবে অবস্থান করত আর সাধারণ মানুষরাও তাদের দেখতে পেত।’ (মুসলিম শরিফ : ১/২৬৯)
২০ হিজরি সনের শাবান মাসে ইন্তেকাল করেন। ওমর (রা.) তাঁর জানাজা পড়ান এবং তাঁর দেহ বহন করেন। জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। (উসদুল গাবাহ ১/১১৩)