একটা সময় প্রেম বিয়ে অনেকটাই পারিবারিক বা সামাজিক বিষয় ছিল। বিয়েতে মা-বাবা বা অভিভাবকের কথা-ই ছিল শেষ সিদ্ধান্ত। এই সমাজে রহিম রূপবানের মতো চরিত্রও রয়েছে। রয়েছে ১২ দিনের ছেলের সাথে ১২ বৎসরের মেয়ের বিয়ের ঘটনা। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এসব কাল্পনিক কাহিনী। কিন্তু ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদের এই সময়ে আমরা যেন এখন অনেকটাই স্বাধীন।
এখন বিয়েকে একান্তই ব্যক্তিগত বিষয় মনে করা হয়ে থাকে। নিজের ইচ্ছে মত সঙ্গী বেছে নেওয়াই যেন আধুনিকতা। আর কেউ কেউ এমন সঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিজের চেয়ে বেশি বয়সের মেয়েকে প্রাধান্য দেয়। বিয়েও করে। অবশ্য এমন সংখ্যা কম হলেও একেবারে বিরল নয়।বিয়ে
ভাব ভালোবাসা
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বয়সের একটা দুরত্ব ভাব ভালোবাসা অনেক বাড়িয়ে দেয়। এতে করে দাম্পত্য জিবনে কলহ তৈরির সম্ভাবনাও অনেক কমে যায়। এই রকমটা সবাই অনুধাবন করতে পারে। তবে এই বিষয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজনের সাথে। এরা বিয়ে করেছেন নিজের চেয়ে বেশি বয়সের নারীকে। সংসারও করছেন বেশ। এদের একজন জানান, বেশি বয়সের নারী বিয়ে করাতে অনেক সুবিধা রয়েছে। তবে সবচেয়ে বর সুবিধা হল। সংসার নিয়ে আপনার চিন্তা না করলেও চলে। কারণ তাঁরা খুবই দায়িত্বশীল ভাবে সবকিছু সামলে নিতে পারে। আর ভালোবাসাটা অবশ্যই সমবয়সী দের চেয়ে বেশিই বৈকি। কম নয়।
পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ
সংসার নামক বিমূর্ত বিষয়টিকে নারীরাই টিকিয়ে রাখে। ফলে বিয়ের সময় নারীর বয়স একটু বেশি হলে তাতে খুব বেশি ক্ষতি নেই। কারণ সাংসারিক দায়িত্ব পালনে স্ত্রী এতে করে আর বেশি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠে। সেইসাথে এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। বয়সের ব্যবধানটা একটু বেশি হওয়ার কারণে সহজাতভাবেই পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধটা বেশি কাজ করে। ফলে সন্দেহ বা খুব বেশি মান-অভিমান, রাগারাগি হয় না। আর পারিবারিক কলহের কন প্রশ্নই আসে না। এতে করে পরিবারে শিশুদের মানসিক বিকাশ ভালোভাবে ঘটে।
দায়িত্বশীলতা
বেশিরভাগ পুরুষ সংসারের দায়িত্ব সম্পর্কে উদাসীন থাকে। সাংসারিক বিষয়গুলো সাধারণত স্ত্রীরা-ই সামলিয়ে থাকেন। মেয়েরা এই সকল বিষয়ে পুরুষের চেয়ে ম্যাচিউর থাকে। এক্ষেত্রে স্ত্রীর বয়স একটু বেশি হলে দায়িত্ব নিতে সুবিধে হয়। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে অনাত্মীয় সম্পর্কের সকল দায়িত্বই সাম্লে নিতে পারে। সেইসাথে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে উপহার নিয়ে ভাবতে হয় না। এক্ষেত্রেও ভাল ভুমিকা পালন করতে পারে স্ত্রীরা। উদাহারণ হিসেবে বিজ্ঞানী আইন্সটাইনের কথা বলা যায়।
তিনি যখন বিয়ে করেন, তখন তাঁর স্ত্রী মিলেভার বয়স ছিল ২৮ বছর। আর আইন্সটাইনের কেবল ২৪। আইন্সটাইনের মা এই বিয়ের বিপক্ষে ছিলেন না। ছেলেকে বলেন, তোর বয়স যখন ত্রিশ হবে, তখন তো এই মেয়ে তোর দাদীর মতো বুড়ি হয়ে যাবে। তাছাড়া মিলেভা, আইন্সটাইনের মতো ইহুদীও ছিলেন না, জার্মানও ছিলেন না। তার বাড়ি ছিল সার্বিয়াতে। আইন্সটাইনের অবশ্য এসব নিয়ে মাথা ব্যাথা ছিল না।
পার্টনার হিসেবে তিনি এমন কাউকে চাচ্ছিলেন যার সাথে তিনি মহাবিশ্বের রহস্য নিয়ে কথা বলতে পারবেন। তিনি বসে বসে আকাশে তারাদের দৈর্ঘ্য মাপবেন। আর বউ বসে বসে বালিশের কভার মাপবে, এমন স্ত্রী তিনি চাচ্ছিলেন না। মিলেভা নিজেও অনেক বড়ো মাপের বিজ্ঞানী ছিলেন। গ্রাজুয়েশন লেভেলে তার স্কোর ছিল ৪.৭, যা আইন্সটাইনের চেয়েও ভালো ছিল। কারণ আইনস্টাইনের স্কোর ছিল ৪.৬। আইন্সটাইনের অনেক কাজে তার স্ত্রীর অংশ ছিল।