প্রায় প্রতিটি মানুষই চুলপড়া সমস্যায় ভুগে থাকেন। প্রতিদিনই কিছু না কিছু পরিমাণে চুল পড়াটা স্বাভাবিকই বটে। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিদিন ১০০টি পর্যন্ত চুলপড়া স্বাভাবিক ঘটনা। যা ১৫০ পর্যন্ত উঠতে পারে। কেননা পুরোনো চুল পড়লেই নতুন চুল গজানোর জন্য জায়গা তৈরি হয়। চুলপড়ার সমস্যা আমাদেরকে ব্যাপকভাবে প্র্রভাবিত করে। কেননা চুলকে আমরা আমাদের ব্যক্তিত্বের সম্প্রসারিত রুপ বলে গণ্য করি।
চুলপড়া প্রতিরোধের উপায় খুব বেশি নয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো উপায়টি হলো, চুলে খুব বেশি রাসায়নিক ব্যবহার না করা। বাজারে এমন অনেক পণ্যই আছে যেগুলোকে চুলের জন্য উপকারী বলে দাবি করা হয়। কিন্তু বাস্তবে সেগুলো হলো একাধিক রাসায়নিকের ককটেল। যা আখেরে আপনার চুলের মারাত্মক ক্ষতিই করবে।
আপনার যদি অনরবত চুল পড়তেই থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। কেননা মারাত্মক কোনো রোগের কারণেও চুল পড়ার সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। রক্তশুন্যতা এবং থাইরয়েড সমস্যার মতো রোগের কারণেও চুল পড়ে। সুতরাং ঠিক কী কারণে আপনার চুল পড়ছে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আমরা এখানে প্রাকৃতিক নির্যাস থেকে তৈরি এমন একটি তেল সম্পর্কে বলব যা চুল পড়া কমাবে খুবই কার্যকরভাবে এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। তেলটি আপনি নিজেই বানিয়ে নিতে পারবেন। এজন্য আপনার দরকার হবে- এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল এবং ল্যাভেন্ডার এসেনসিয়াল অয়েল।
নারকেল তেল যত খাটি হয় তত ভালো। এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল হলো মূলত, অপরিশোধিত নারকেল তেল। কোনো খাদ্য যত কম প্রক্রিয়াজাত করা হয় তত তার পুষ্টিগুন অক্ষুণ্ন থাকে। সুতরাং অপরিশোধিত নারকেল তেল ব্যবহার করাই ভালো।
পরিমাণ মতো নারকেল তেল নিয়ে তাতে দুই থেকে তিন ফোটা ল্যাভেন্ডার এসেনসিয়াল অয়েল মেশান। এরপর তা মাথার ত্বকে ম্যাসেজ করে লাগান। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী নারকেল তিন নিন।
প্রতি সপ্তাহে দুবার এভাবে মাথার ত্বকে তেল ম্যাসেজ করে লাগান। তেলা লাগানোর অন্তত এক ঘন্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। প্রথমবার ধোয়ার পরই আপনি দেখবেন যে আপনার চুল আগের চেয়ে কোমল এবং মসৃণ হয়ে এসেছে। কেননা এই তেল কন্ডিশনার হিসেবেও কাজ করে।
নারকেল তেল চুলপড়া ও দেহের যত্ন নেওয়ার জন্য সেরা একটি তেল। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ব্যাকটেরিয়ারোধী এবং ছত্রাকরোধী উপাদান। অনেক সময় চুল পড়ার কারণ হতে পারে মাথার ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণের কারণে। নিয়মিত ব্যবহারে নারকেল তেল সেই সমস্যার সমাধান করবে। নারকেল তেল সবচেয়ে ময়শ্চারাইজিং বা আর্দ্র তেল।
আর চুলে ব্যবহারযোগ্য সব ধরনের এসেনসিয়াল অয়েলের মধ্যে ল্যাভেন্ডার এসেনসিয়াল অয়েল হলো সেরাটি। তেলটি এর শান্ত এবং শীতলকরন প্রভাবের জন্য পরিচিত। মিষ্টিগন্ধযুক্ত এই তেল নতুন চুল গজাতে সহায়ক। ল্যাভেন্ডার তেল মাথার ত্বককে সিক্ত করে এবং সেবাম উৎপাদনে ভারসাম্য রক্ষা করে। সেবাম হলো ত্বকের মেদকোষ থেকে ক্ষরিত রস। সব ধরনের চুলেই ব্যবহার করা যায় ল্যাভেন্ডার অয়েল।