আগামীকাল ১৮ মে ২০২১ সাল। এই দিনেই নিজের মৃত্যুর তারিখ জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বিতর্কিত সংগীত তারকা মাঈনুল আহসান নোবেল। রোববার (১৬ মে) রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানান তার মৃত্যুর তারিখ। পোস্টে লেখেন, ‘নাম: মাইনুল আহসান নোবলে। জন্ম: ৭ নভেম্বর, ১৯৯৭। মৃত্যু: ১৮ মে, ২০২১। বয়স: ২৩ বছর’।
এরই কিছুক্ষণ আগে আরেক পোস্টে নোবেল জানান, ‘গান বাজনাকে ইতি। মেহেরবান রিলিজ হইলে হইলো, না হইলে নাই। কিন্তু যারা আমার পেছনে লাগতেসে, এগুলারে দেখবো আজকের থেকে। বেয়াদব না? ঠিকাছে। সিনিয়র জুনিয়র, সব। আসো খেলি! গোপালীর খেল শুরু। শালা বি এন পি তাই না? দেখি কেমনে টিকিস।’
গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল পরিচিতি পেয়েছেন জি বাংলার সংগীত রিয়েলিটি শো থেকে। কভার করেছেন দেশের লিজেন্ডদের গান। রাতারাতি খ্যাতি পেয়ে যান নোবেল।
খ্যাতি পাওয়ার পর একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিজেকে জড়িত করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে পোস্ট, দেশের জাতীয় সংগীত নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, লিজেন্ড শিল্পীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন নোবেল। সবশেষ সড়ক দুর্ঘটনায় বৃদ্ধকে বাঁচানোর মিথ্যা গল্প শুনিয়েছিলেন।
এরপর নগর বাউল জেমসকে নিয়ে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। জনপ্রিয় গীতিকার-সুরকার ইথুন বাবুকে ‘চোর’ বলেও উল্লেখ করেছেন নোবেল। যদিও নোবেল দাবি করছেন, তার ফেসবুক হ্যাক হয়েছে। তবে পুরোপুরি নয়, আংশিক।
সেই বিতর্কের রেশ না কাটতেই নতুন বিতর্কে জড়ান নোবেল। গানের সুর ও সংগীতায়োজনের মালিকানা নিয়ে সংগীত পরিচালক আহমেদ হুমায়ূনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন তিনি।
নোবেল তার পেজে নতুন গান ‘মেহেরবান’ এর প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেখানে গানটির পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি সুর ও সংগীতে নিজের নাম উল্লেখ করেছেন। তবে আগে থেকেই এটা প্রকাশিত যে ‘মেহেরবান’ গানটি গাইছেন নোবেল, আর সুর ও সংগীতে ছিলেন আহমেদ হুমায়ূন। তাই তার নাম বাদ পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আহমেদ হুমায়ূন।
তিনি নিজের ফেসবুকে এ ব্যাপারে লিখেছেন, ‘এই শাস্তি আমার জন্য খুব দরকার ছিল। কারণ পাপ আমি করেছি শাস্তি তো আমাকেই পেতে হবে। এক অমানুষ মানুষ করার দায়িত্ব নিয়েছিলাম। কিন্তু ভুলেই গেছিলাম অমানুষ তো আর মানুষ হবার নয়। এই অপরাধে আপনারা আমাকে শাস্তি দিন। যার যা মন চায় তাই শাস্তি দিন। আমি মাথা পেতে নেব।’
‘আমার সুর সংগীত করা গান তার নামে পোস্ট দিছে। অথচ সারা দেশ জানে আপকামিং এই মেহেরবান গান আমার সুর-সংগীতে করা। আমিও দেখি এই গান তোর মতো অমানুষের নামে কেমনে রিলিজ হয়।’
নোবেল আইডি হ্যাকের নামে প্রতারণা করেন দাবি করে হুমায়ূন আরও লেখেন, ‘আর হ্যাঁ আইডি হ্যাক করার নামে যে নতুন নাটক চলতেছে এগুলা কেউ বিশ্বাস কইরেন না প্লিজ। এগুলো ও নিজেই করে। আমি সত্যিই এই জাতির কাছে লজ্জিত। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন সবাই।’
এদিকে আহমেদ হুমায়ূনের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিয়ে পাল্টা আরেকটি স্ট্যাটাস দিন নোবেল। সেখানে তিনি লেখেন, ‘হায়রে হুমায়ূন! তুমি জানি কে? কোনোদিন তো তোমার নামও শুনি নাই আগে! তিনবার রিজেক্ট করার পর হাতে পায়ে ধরে ‘অভিনয়’ গাওয়াইছো! তাও আবার ৯ লাখ টাকা খরচ করে। জীবনে ৬০০ গান করছো! পরে শুনে দেখলাম, অর্ধেকের বেশি গানের সুর নকল! হাহাহা!!’
‘কিং খান’ থেকে শুরু করে ডিরেক্টর ‘ইফতেখার চৌধুরী’ সবার সঙ্গেই কাজ করছো। ভালো কথা। তবুও একটা হিট গানের নাম জিজ্ঞাস করলে এক বাক্যে বলতে বাধ্য তুমি! বলো তো কি গান? ‘অভিনয়!!’ তাইনা ছোটো ভাই?’
‘১৮ বছরের ক্যারিয়ারে করছো-টা কি তুমি?! সেই নোবেলকে তুমি বাপ তুলে গালি দাও?! কত বড় অকৃতজ্ঞ মানুষ তুমি!! তোমার কত মাসের বাড়ি ভাড়া দিছি আমি, ভুলে গেছো? ব্যাপার না। গরিবদের দান করতে আমি ভালোবাসি।’
‘নিজে তো অভাবে পড়ে রাজশাহী ভাগছো ঘটিবাটি নিয়ে। বউও ভাগছে অন্য পোলার সঙ্গে। গাড়িটাও নিয়ে গেছে। তোমার পুরুষত্ব নিয়ে প্রশ্ন আছে আমার! ‘মেহেরবান’ গানের ৫০ শতাংশ সুর-সংগীত আমার করা লাগছে। তুমি নিজে স্বীকার করেছো হুমায়ূন! মামলা খাওয়ার জন্য রেডি থাকো! স্ক্রিনশট দিয়ে দিলাম! সবাই দেখো, কি নোংরা কথা বলছে আমাকে!’