দীর্ঘদিন ধরেই বায়ো বাবলের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। গত মাসে জিম্বাবুয়ে সফরের পর দেশে ফিরে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য বায়ো বাবলে প্রবেশ করতে হয় ক্রিকেটারদের। ফলে লম্বা সময় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন তারা। তবে অস্ট্রোলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শেষেই পরিবারের কাছে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা। সেই সুযোগেই স্ত্রীর সঙ্গে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ত্রীর সঙ্গে একটি ছবি আপলোড করে আলোচনা-সমালোনায় পড়েছেন তিনি। তবে বেশির ভাগ মানুষের প্রশংসায়ও ভাসছেন এই গতিময় পেস বোলার। ইতোমধ্যে ছবিতে রিয়েক্ট পড়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজারের বেশি। কিছু সংখ্যক মানুষ ছাড়া সবাই ছবিটি পছন্দ করেছে। কমেন্ট পড়েছে সাড়ে আট হাজারে বেশি এবং শেয়ার হয়েছে প্রায় আটশো।
ছবিতে দেখা যায় স্ত্রী সৈয়দা রাবেয়া নাঈমার সঙ্গে কক্সবাজার সমুদ্রের সঙ্গে ঘেঁষা সায়মন বিচ রিসোর্টের নীল জলে অর্ধেক ডুবে আছেন তাসকিন আহমেদ। যেখানে নীল রঙের টি-শার্ট পরে আছেন তাসকিন। আর তার স্ত্রী বরাবরের মতোই বোরকা ও হিজাব দ্বারা আবৃত, যা নিয়েছে হচ্ছে আলোচনা-সমালোচনা। তাসকিন-নাঈমার ছবিটিতে মাহমুদুল হক জালীস নামের এক লিখেছেন, ‘পর্দার ভেতরে রয়েছে মা বোনদের নিরাপত্তা।
আল্লাহ আপনাদেরকে ইসলামের জন্য কবুল করুক। আমিন।’ একই ধরনের মন্তব্য করে এনএম সাদাৎ নামের একজন লিখেছেন, ‘আপনাদের কাপল পিকগুলা দেখে বিশেষ করে ভাবির পর্দা দেখে বেশি ভালো লাগে। আল্লাহ আপনার ফ্যামলিকে ভালো রাখুক সব সময়।’ ফারুক হোসেন নামে আরেক লিখেছেন, ‘যারা বলে পর্দা করলে স্বাধীনতা নষ্ট হয় এবং মেয়েরা জীবন উপভোগ করতে পারে না এই ছবিটি তাদের জন্য থাপ্পরের মতো।’
এদিকে, আফগানিস্তানের চলমান ইস্যুকে মিলিয়ে মোহাম্মদ শাহ আলম নামে লিখেছেন, ‘এমনিতেই আফগানিস্তানে মেয়েরা বোরকা পড়ার জন্য শপে যাচ্ছে এবং কিনছে। এটা দেখে আমাদের উপমহাদেশের নারীবাদী ও নাস্তিকদের গা জ্বলতেছে তখন তারা এই ছবি দেখে তাদের চুলকানি আরো বেড়ে যাবে। তখন তারা বলবে আমাদের দেশে তা লে বা ন ঢুকে পড়েছে। ধন্যবাদ উভয়জনকে।দাম্পত্য জীবন সুখী হোক। একই সঙ্গে বিতর্তিক লেখিকা তসলিমাকে জড়িয়ে এসএইচ রফিক নামের একজন লিখেছেন, ‘এই ছবি তসলিমা নাসরিন দেখলেই বলবে, মেয়ে স্বাধীনতা হরন করছে তাসকিন।’
সায়মন বিচ রিসোর্টের সমুদ্র ঘেঁষা এই সুইমিংপুলে বেশ কিছু বাধ্যবাধকতা থাকলেও তাসকিনের জন্য তা না দেখে ইকফা নিশিতা নামের একজন লিখেছেন, ‘এটা কি সেলেব্রিটি ঘরানার হওয়ার সুফল? কোনো হোটেলের পুলেই সাধারণ সালোয়ার কামিজ কিংবা টিশার্ট কোন পোশাকেই পুলে নামতে দেয় না। হয় পলিয়েস্টার কাপড়ের ড্রেস পরে নামতে হবে নতুবা তাদের শপ থেকে সুইমওয়্যার কিনতে বাধ্য করে।
অন্যথায় নো এন্ট্রি, অনেক সিনিয়র সিটিজেনের সাথেও রাফ বিহেভ করতে দেখেছি শুধুমাত্র ড্রেস কোডের জন্য। এই ব্যাপারটা ভালো লাগলো না। সবাই ই হোটেলে টাকা দিয়ে থাকতে যায়, রুলস শিথিল করলে সবার জন্যই করা উচিত। সাধারণ মানুষ হয়ত আহামরি কেউ না, তাই বলে এতটা ফেলনাও না। কারো সাথে কারোই তুলনা দিচ্ছি না। ফ্যাক্ট বলতেছি যেটা সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হয়। তাদের সাথে যেই পক্ষপাত আচরণটা করা হয়।’
তবে ভিন্ন বিপরীত মন্তব্য করেছেন অনেকেই। তাদের মধ্যে মাসুদ রেজা আকাশ নামের একজন লিখেছেন, ‘কিছু কিছু বিষয় পদর্শন করলে পর্দা করলেও পর্দার অবমাননা হয়। সওয়াব তো হয় না উলটো পাপ হয়। আর একান্ত ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি পোস্ট না করাই উত্তম।’ শুভ শাহা নামের একজন লিখেছেন, ‘হাস্যকর, সুইমিং পুলে বোরখা আর মুখোশ পড়ে কারা বা কে গোসল করে।
এত সমস্যা তাইলে নিজেও বোরখা পড়ে ছবি দিতে পারেন বা স্ত্রীর ছবি না দিলেই হয়! যারা আল্লাহর পথে চলে ছবি তোলে এরকম একজন ভেজা নারীর শরীরের উর্ধাংশ সবার সামনে উপস্থাপন কতটা ইসলাম সম্মত? আর স্ত্রীকে নিয়ে সুইমিং পুলে নেমেছেন আসে পাশের মানুষ ভেজা শরীরে আপনার স্ত্রীর শরীরের ভাজ প্রত্যক্ষ করেছে যা নগ্নতার শামিল এবং শরিয়া বিরোধী। আল্লাহ আপনাকে সুমতি দিন। স্ত্রীকে ঘরে রাখুন। পর্দার নামে এইসব ভেক ধারা কাম্য নয় ‘
মোহাম্মদ আবু সায়েদ লিখেছেন, ‘তাসকিন ভাই, বউকে এত পর্দায় রাখছেন কি লোককে দেখানোর জন্য। মানুষ দেখলেই কি পর্দা পালন হয়ে যায়! কাউকে না দেখানোটাই পর্দা। ফেসবুকে না দিয়ে আপনার সংরক্ষণে রাখুন পরকালে ছবিটি আল্লাহ আপনাকে ফেরত দিবেন। ধন্যবাদ।’