আফগানিস্তানের মাটির নিচে অনেক ধরনের মূল্যবান খনিজ সম্পদ রয়েছে। ১০ বছর আগেই মার্কিন সেনাবাহিনী ও সে দেশের ভূতত্ত্ববিদরা সেই খবর পেয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব খনিজ সম্পদ দিয়ে এক দশকেই দেশটির অর্থনীতি পাল্টে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু সেই সম্পদ তুলে আনার কলাকৌশল ও কাজে লাগানোর বিজ্ঞান কি তালেবানের আছে? আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে রয়েছে ১ লাখ কোটি ডলার মূল্যের ‘গুপ্তধন’। এর মধ্যে অন্যতম খনিজ লিথিয়াম মৌল।
দূষণহীন যান চলাচলের ব্যাটারি, মোবাইল ফোনের ব্যাটারির জন্য যা আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত। অথচ প্রকৃতিতে দুর্লভ এবং খনি থেকে সেই মৌলের নিষ্কাশনের পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল বলে যা বহুল ব্যবহারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তানকে আলোয় ফেরাতে পারে মাটির তলায় থাকা এই দুর্লভ ‘গুপ্তধন’। তা ছাড়াও রাশি রাশি তামা, সোনা, আকরিক লোহাসহ নানা ধরনের বিরল মৌল রয়েছে বিভিন্ন প্রদেশের মাটির নিচে। এই সব ‘গুপ্তধন’ই ঘুরে দাঁড়ানোর হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে তালেবান শাসিত আফগানিস্তানের। মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে দেশটির অর্থনীতির।
ইকোলজিক্যাল ফিউচার্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা বিজ্ঞানী ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রড শুনোভার জানিয়েছেন, মাটির তলায় কী পরিমাণ ‘গুপ্তধন’ রয়েছে আফগানিস্তানে তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের গতিতে রাশ টানতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করে সার্বিকভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ি পথে নামাতে হবে।
আর তার জন্য প্রয়োজন ব্যাটারি রিচার্জ করার জন্য জরুরি লিথিয়াম, তামা, অ্যালুমিনিয়াম ও নিওডিয়াম মৌল। খনিজ লিথিয়াম সবচেয়ে বেশি মজুত রয়েছে এখন বলিভিয়ায়। আফগানিস্তানের ভাণ্ডার তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে।
তিনি বলেন, বিশ্বে লিথিয়াম, কোবাল্ট ও নিকেলের মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মৌলগুলোর সরবরাহে রয়েছে যে প্রথম তিনটি দেশ ( মোট ৭৫ শতাংশ)-চীন, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ও অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তানের খনিজ ভাণ্ডার পাল্লা দিতে পারে তার সঙ্গেও। এই খনিজগুলো ব্যবহার করে এক দশকের মধ্যেই এশিয়ার এই অঞ্চলের ধনীতম দেশ হয়ে উঠতে পারে আফগানিস্তান।
তবে ক্ষমতার দখল নিজেদের হাতে রাখতে কি এ বার বিপুল খনিজ সম্পদের সুফল দেশের অর্থনীতিকে দিতে পারবেন তালেবরা? সংশয় থেকেই যাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।