কংক্রিটের দেয়াল, উপরে কাঁটাতারের বেড়া। ওপাশেই কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এপাশে হাজারো মানুষের অপেক্ষা। তাদেরই একজন দুই হাতে ছোট্ট এক শিশুকে তুলে ধরলেন। কাঁটাতারের ওপাশ থেকে শিশুটিকে নিজেদের কাছে নিলেন এক মার্কিন সেনা।
সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। গত রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান আবার তালেবানের দখলে। দেশটির নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যাওয়ার পর সেখানকার জনগণের একাংশ যে কতটা অসহায়, তা ফুটে উঠেছে এই ভিডিওতে।
কাঁটাতারের এপাশে অপেক্ষা করা লোকজনও সেসব অসহায় মানুষেরই একাংশ। তালেবানের শাসন থেকে বাঁচতেই বিমানবন্দরে ঢুকতে চান তারা। পালাতে চান দেশ ছেড়ে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানা যায়, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, নাম না–জানা ওই শিশু অসুস্থ ছিল। তাকে সাহায্য করার জন্য মার্কিন মেরিন সেনাদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল।
জন কিরবি বলেন, আপনারা যে ভিডিও নিয়ে কথা বলছেন…শিশুটি অসুস্থ ছিল। তার মা–বাবা শিশুটিকে দেখভালের জন্য মেরিন সেনাদের কাছে আবেদন করেছিলেন। এরপর আপনারা দেখেছেন, সেনারা শিশুটিকে দেয়ালের ওপর দিয়ে নিজেদের কাছে নেয় এবং বিমানবন্দরে থাকা নরওয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসার পর শিশুটিকে তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
মার্কিন এই মুখপাত্র আরও জানান, তিনি ওই শিশুটির পরিবার সম্পর্কে জানেন না। তবে তাদের অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হয়েছে। তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের যারা মার্কিনদের সহায়তা করেছেন কিংবা হামলার ঝুঁকিতে রয়েছেন— এমন ব্যক্তিদের আশ্রয় দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের তালিকায় পড়েছেন ওই শিশুর মা–বাবাও।
এদিকে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিই শুধু নয়, আফগান শিশুদের সহায়তায় এগিয়ে আসা সেনাদের কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী। এর একটিতে দেখা যায়, কম্বলে মোড়ানো এক আফগান শিশুকে কোলে নিয়ে রেখেছেন এক মার্কিন সেনা। অপর একটি ছবিতে দুই নারী সেনার সঙ্গে আরেকটি আফগান শিশুকে দেখা গেছে।
এর আগে গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন ঘটে।আফগানিস্তানের ক্ষমতায় তালেবান আসার পর দেশটিতে চরম মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকশ করতে শুরু করেন বিশেষজ্ঞরা। নানান শঙ্কায় হাজারো নাগরিক কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় করে। আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে তারা। সূত্র : এএফপি