বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের টিকেট পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের শেষ ম্যাচের সমীকরণটা সহজ ছিল। নূন্যতম ৩ রানের ব্যবধানে জিতলে স্কটল্যান্ডকে টপকে যাবে টাইগাররা আর ১৫ রানের বেশি ব্যবধানে জিতলে ওমানকে টপবাকে সাকিব-মুশফিকরো। এই সমীকরণকে সামনে রেখে নামা ম্যাচে পাপুয়া নিউ গিনিকে ৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। তারই সঙ্গে নেট রান রেটে গ্রুপ পর্বে বাকি তিন দলকে টপকে বিশ্বকাপের মূলপর্ব নিশ্চিত করেছে টাইগাররা।
তবে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের শীর্ষে থেকেই সুপার টুয়েলভে পা রাখছে কিনা সেটা নিশ্চিত হতে অপেক্ষা করতে হবে আজ রাতের ওমান বনাম স্কটল্যান্ডের ম্যাচের ফলাফলের জন্য। ওই ম্যাচে স্কটল্যান্ড জয় পেলে বাংলাদেশকে সুপার টুয়েলভে পা রাখতে হবে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় নম্বরে থেকেই।
কারণ ওমানকে হারিয়ে স্কটিশরা জিতলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে শীর্ষে চলে যাবে তারা। অন্যদিকে চার পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে থেকে বিশ্বকাপের মূলপর্বে পা রাখবে টাইগাররা। অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ওমান জয় পেলে নেট রান রেটে পিছিয়ে থেকে বাদ পড়বে স্কটিশরা। তখন সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের সঙ্গী হিসেবে পা রাখবে ওমান।
তবে গ্রুপ পর্বের শীর্ষে বা দ্বিতীয় যে স্থানেই হোক না কেনো, পাপুয়া নিউ গিনির বিরুদ্ধে বিশাল বড় জয় নিয়ে বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী। এদিন পাপুয়া নিউ গিনির বিরুদ্ধে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করে ১৮১ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দাড় করায় টাইগাররা। জবাবে মাত্র ৯৭ রানেই গুটিয়ে যায় পিএনজি। বল হাতে বিধ্বংসী ছিলেন সাকিব আল হাসান। ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে এনে প্রথম সাফল্য দেন সাইফউদ্দিন। তার করা তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন লেগা সাইকা (৫)। ১১ রানে পিএনজির প্রথম উইকেট পতন হয়। দুই রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটান তাসকিন। চতুর্থ ওভারে তার বলে অধিনায়ক আসাদ ভালার (৬) অসাধারণ ক্যাচটি নেন নুরুল হাসান সোহান। পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে আসেন সাকিব। প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দেন চার্লস আমিনি (১)। লং অনে দুর্দান্ত দক্ষতায় ক্যাচটি তালুবন্দি করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এরপর আরও উইকেট তুলে নেন সাকিব। তার বিধ্বংসী বোলিংয়ে বিধ্বস্ত হয়েছে পিএনজির ব্যাটিং লাইনআপ।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পাওয়ার প্লেতে নাইম শেখের উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান তুলে টাইগাররা। নাইম আউট হওয়ার পর জুটি বাধেন সাকিব এবং লিটন। তাদের ব্যাটেই উঠে পাওয়ারপ্লের রান। কিন্তু সাকিব আর লিটন মিলে ৫০ রানের জুটি গড়ে ওঠার পরই নেমে এলো বিপদ। পাপুয়া নিউগিনির অধিনায়ক আসাদ ভালা নিজেই চলে আসেন বোলিংয়ে। তিনি ডান হাতি অফ স্পিনার। স্পিন আসতেই বিপদ ডেকে আনলেন লিটন দাস।
আসাদ ভালার ওভারের প্রথম বল মোকাবেলা করতে গিয়ে স্লগ সুইপ খেলেন লিটন। বল উঠে যায় ডিপ মিডউইকেটে। ফিল্ডার ছিলেন সেই সেসে বাউ, যিনি নাইমের ক্যাচও ধরেছিলেন। ২৩ বলে ২৯ রান করে আউট হয়ে যান লিটন। বাউন্ডারি এবং ছক্কা মেরেছিলেন ১টি করে। এরপর মুশফিক ফিরেন মাত্র ৫ রান করেই। ব্যাটে হাতে আজও ভালো করেছেন সাকিব আল হাসান। ৪৬ রানের এক ঝলমলে ইনিংস খেলেছেন তিনি। সাকিব ফিরে গেলে অপর প্রান্ত থেকে ঝড় তুলেন মাহমুদউল্লাহ। মাত্র ২৭ বলেই তুলে নেন ফিফটি। এরপর রিয়াদ ফিরে গেলে সাইফউদ্দিনের মাত্র ৬ বলে ১৯ রানের ঝড়গতির ইনিংসে ১৮১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাড় করায় টাইগাররা।