অনির্দিষ্টকালের জন্য শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহন মালিক সমিতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন মো. মজুমদার আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জেহাদের ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে আমাদের পরিবহন চালানো সম্ভব নয়। হুট করে এই ধরনের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।’ পরিবহন মালিক সমিতির একটি সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে ঢাকার বাইরে অনেক জায়গায় পণ্য পরিবহনের গাড়ি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। আজই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে পরিবহন ধর্মঘট কার্যকর হতে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন
ভারতে কমলো পেট্রোল-ডিজেলের দাম
ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার (০৪ নভেম্বর) থেকে দেশটিতে পেট্রোলে লিটারপ্রতি ৫ রূপি ও ডিজেলে ১০ রূপি হারে উৎপাদন শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই কলকাতায় আইওসির পাম্পে লিটারপ্রতি পেট্রোলের দাম ৫.৮২ রূপি কমে ১০৪.৬৭ রূপি হয়েছে।
ডিজেলের দাম ১১.৭৭ রূপি কমে হয়েছে ৮৯.৭৯ রূপি। তেলের মূল দামের সঙ্গে পরিবহন খরচ এবং কেন্দ্রীয় শুল্ক ধরে যে প্রাথমিক দাম ঠিক হয়, তার ওপর বসে রাজ্যের যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট)। তার সঙ্গে ডিলারদের কমিশন জুড়ে চূড়ান্ত হয় পাম্পে তেলের মোট দাম। যে দামে তেল কেনেন ক্রেতা।
পশ্চিমবঙ্গে ভ্যাটের হার লিটারপ্রতি পেট্রোলে ২৫ শতাংশ ও ডিজেলে ১৭ শতাংশ। ফলে কেন্দ্রীয় শুল্ক যথাক্রমে ৫ এবং ১০ রূপি করে কমার পরে ভ্যাটের হার এক থাকলেও মোট দাম আরও কিছুটা বেশি কমেছে। এত দিন বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলো কেন্দ্রের কাছে উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমানোর দাবি করছিল। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক বলেছে, রাজ্যগুলো ভ্যাট কমিয়ে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দিক। জানা গেছে, জ্বালানিতে শুল্ক কমানোর ফলে চলতি অর্থবছরে মোদি সরকার প্রায় ৫৫ হাজার কোটি রূপি রাজস্ব হারাতে চলেছে।
এদিকে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের পরে এনডিএ শাসিত সাতটি রাজ্য— বিহার, অসম, কর্নাটক, গোয়া, ত্রিপুরা, মণিপুর ও উত্তরপ্রদেশ পেট্রোলে ১ রূপি ৩০ পয়সা থেকে শুরু করে ৭ রূপি এবং ডিজেলে ১ রূপি ৯০ পয়সা থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত ভ্যাট বা শুল্ক কমিয়েছে। ফলে ওই রাজ্যগুলোতে তেলের দাম কমেছে। উত্তরাখণ্ড সরকার পেট্রোলের দাম ২ রূপি কমানোর কথা বললেও ডিজেল নিয়ে কিছু বলেনি। হিমাচল প্রদেশ জানিয়েছে, দাম কমাচ্ছে তারাও।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, লোকসভা ও বিধানসভার উপ-নির্বাচনে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। হিমাচল প্রদেশে বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধির মূল্য দিতে হয়েছে ভোটে। ২০২২-এর গোড়ায় উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাবসহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। জনতার ক্ষোভ টের পেয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিল।
তবে ভারতে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে বেড়েছে তেলের দাম। বুধবার (০৩ নভেম্বর) জ্বালানি তেলের দাম ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বেড়েছে, যা ইতোমধ্যে কার্যকর হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে থাকায় ‘লোকসান কমাতে’ দেশের বাজারেও এই জ্বালানির তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।