কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স চার মাস ১৭ দিন পর আবারও খোলা হয়েছে। আটটি সিন্দুকে পাওয়া গেছে ১২ বস্তা টাকা। শনিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বাক্স খোলার পর সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত গণনা শেষে সেখানে তিন কোটি সাত লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা পাওয়া গেছে।
এদিকে দানবাক্সে দেশি মুদ্রা, স্বর্ণ-রৌপ্য অলঙ্কারের সঙ্গে এক গৃহবধূর চিঠি পাওয়া গেছে। অজ্ঞাত এক গৃহবধূর চিঠি পড়ে টাকা গণনার তদারকি কাজে নিয়োজিত কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম। চিঠির একটি ছবিও তুলে রাখেন।
ওই গৃহবধূ চিঠিতে লেখেন- হে আল্লাহ, পাগলা মসজিদের রহমতে মাসুমকে টাকা-পয়সা আসার ব্যবস্থা করে দিও। হে আল্লাহ তুমি সাহায্য কর। তুমি ছাড়া কোনও মাবুদ নেই। হে আল্লাহ পাগলা মসজিদের রহমতে আমার স্বামী যেন অনেক টাকা-পয়সার মালিক হয়।
সব ঋণ থেকে, অভাব থেকে-মানুষের কটূ কথা থেকে মুক্তি পায়। হে আল্লাহ তুমি দয়া কর। পাগলা মসজিদের রহমতে আমার স্বামীর সব দুঃখ দূর করে দিও। অনেক আশা নিয়ে এসেছি তোমার দরবারে। খালি হাতে ফিরিয়ে দিওনা পাগলা মসজিদের রহমতে।
এদিকে দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত প্রশাসন, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স মাদরাসা-এতিমখানার কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী টাকা গণনা করে তিন কোটি টাকা পান। পাগলা মসজিদে দান করলে মনের ইচ্ছেপূরণ হয়, এমন বিশ্বাসে মুসলমান ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের লোকজন এখানে দান করে থাকেন। নগদ টাকা ছাড়াও পাওয়া যায়, চাল, ডাল, গবাদিপশু আর হাঁস-মুরগি। এসব পণ্য নিলামে বিক্রি করে জমা করা হয় মসজিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে।
জনশ্রুতি রয়েছে, ৫০ বছর আগে এক সাধু পুরুষ নরসুন্দা নদীর মাঝখানে পানিতে মাদুর পেতে আশ্রয় নেন। তার মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। সেই থেকে পাগলা মসজিদ নামে পরিচিতি পায় মসজিদটি।