বা’সর ঘরে ঢুকে পাশে বসতেই বৌ আমাকে বলল….
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখু’ন তো কয়টা বাজে?? বা’সর রাতে বৌ’য়ের এমন সাহসী প্রশ্নে কিছুটা বিচলিত হলাম। তখন ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি রাত ১২.৩০মিঃ। আমি বৌয়ের পাশে বসে আস্তে করে বললাম….. —-শোনো, আমা’র এখন বিয়ে করার কোন ইচ্ছেই ছিলোনা।
আমা’র বাবা-মায়ের পছন্দেই তোমাকে বিয়ে করেছি।তবে আমা’র কারো সাথে কোন স’ম্পর্ক ও নেই। কিন্তু আমি বিয়ের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। তাই আমি এখন চাইলেও এত সহ’জে তোমাকে বউ হিসেবে মানতে বা বৌয়ের অধিকার দিতে পারবো না।
কথা গুলো বলে শেষ করা মাত্রই নতুন বউ আমা’র পাঞ্জা’বির কলারটা চেপে ধরে বলল…..—-আমাকে কি খেলার পুতুল মনে হয় নাকি??পছন্দ হয়নি,বিয়ে করতে চাননি এইটা আগে বলতে পারলেন না??নিজের মায়ের মন রক্ষা করতে আমা’র সব আশা-স্বপ্ন কেকেন বলিদান দিতে হবে? বিয়ে করার ইচ্ছে নেই,এইটা আমাকে আগে বললেই পারতেন।
তবেই আমি আ’মা’র পক্ষ থেকে বিয়ে ভেঙে দিতাম।মা’য়ের প্রতি ভন্ড ভক্তি শ্রদ্ধা দেখাতে গিয়ে আমা’র জীবনটা কেন এইভাবে নষ্ট করে দিলেন হু’ম?আমি তো আপনার কোন ক্ষতি করিনি। এখন আমি যে’ভাবে বলব সেভাবেই সব হবে। ঠিক আছে????বলেই কলার টা ছেড়ে দিলো। পরে আবার বলল….—-আচ্ছা যা হবার তা তো হয়েই গেছে।
দিতে হবে না আপনাকে বউয়ের অধি’কার।যান নিচে গিয়ে ঘুমান।একদম খাটে ঘুমাতে পারবেন না।বলেই আমা’র বালিশ পা ফ্লোরে ছুড়ে মা’রলো।আমি ওবাধ্য ছে’লের মতো ফ্লোরেই শুয়ে পড়লাম।আর মনে মনে ভাব’তে লাগলাম,কেমন গুন্ডি মেয়ে রে বাবা জীবনেও এমন মেয়ে দেখিনী।মনে তো হচ্ছে জীবন পুরাই তেজপাতা করে ছাড়বে।
ফ্লোরে ঘুমই আসছেনা।কখনই ফ্লো’রে ঘুমাই নি।কিন্তুআজকে নিজের অমতে বিয়ে করার কারনেই ফ্লো’রে ঘুমাতে হচ্ছে।এর মধ্যে মশার আ’ন্দোলন। ইসসসসসস,,,,,,সহ্য হচ্ছেনা।চোখ’বন্ধ শুয়ে করে আছি।কখন জানি ঘুমটা লেগে গেছে বুঝতেই পারিনি।হঠাৎই সজাগ হয়ে দেখি আমা’র শরীরে কম্বল আর পাশে ও মশার কয়েল লাগানো।
মন’টাতে একটু স্বস্তি পেলাম,চো’র হলেও মানুষ ভালো।মনে মায়া-দয়া আছে। পরের দিন ঘুম থেকে উঠেই দেখি টেবিলে চা রাখা। চা খেয়ে,ফ্রেশ হয়ে রুমে বসে ফোন টিপছিলাম তখন ই তানিয়া (আমা’র বৌ) এসে বললো…..—-এইযে সেই কতক্ষন যাবত খাবার নিয়ে সবাই অ’পেক্ষা করছে আর আপনি ঘরে বসে আছেন কেন?এখনি নিচে চ’লুন আগে……??বলেই আমা’র কানের কাছে এসে আস্তে করে বললো…—–নাকি খাবার টা রুমে নিয়ে আ’সবো?আমি তো হার্ট এ্যাটাক হতে হতে বেচেঁ গেছি।
আমি তো ভাবছিলাম,বউ বুঝি এইবার ও কলার ধরেই আমাকে খাবার’টেবিলে নিবে।কিন্তু না,বউয়ের স্বর পাল্টে গেছে,তবে কি বউ আমা’র প্রে’মে পড়ে গেল নাকি??কথাটা ভাবতে ভাবতেই বউ’য়ের দিকে তাকালাম। হা হয়ে তাকিঁয়ে আছি,বউ তো আমা’র হেব্বি সুন্দরী।রাতে তো ভাবছিলা মহিটলারনি।এখন দেখি না মায়াময়ী।এইবার যে আমি’বউয়ের প্রে’মে পড়ে গেলাম।নিজেই নিজেকে বললাম…—-পিন্টু মনে হয় তুই তোর হিট’লারনি বউয়ের প্রে’মে পড়েগেছিস।
হঠাৎ একটা বিকট শব্দে বাস্তবে ফিরলাম।সা’মনে তাকিঁয়ে বউ আমা’র ফ্লোরে পরে চোখ বন্ধ করেআছে।বুঝতে পারলাম,পাগলীটা খুবই ব্যথা পাইছে।দৌড়ে গিয়ে টেনে তুলে বসাতে গেলাম আর অমনি আ’স্তে করে বলল…..—-কেমন স্বামী গো আপনি??আমি তো একটু ভ্যাবা’চ্যকা খেয়ে গেলাম।বললাম…—-আমি আবার কি করলাম।বৌ বলল….—-আমি মাটিতে পরে আছি কই কোলে করে নিয়েবিছানায় শোয়াবেন,তা না করে আমা’র হাত ধরে টান’ছেন।সাথে সাথেই আমি কোলে করে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল….—-ইচ্ছে করে এইভাবে ই ধরে রাখি সারাটা জীবন।
কিন্তুআপনি তো আমাকে প’ছন্দই করেন না। কথা শেষ করেই তানিয়া দীর্ঘ নিঃশ্বা’স ছাড়লো। আমা’রও বুকের ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে গেল।আমা’রো খুব বলতে ইচ্ছা হচ্ছিল * কপালে একটা চুমো একেঁ দিয়ে বলি …—-পাগলী আমি যে তোমাকে ভা’লোবেসে ফেলেছিগো।কিন্তু পারলাম না।কোথায় জানি একটা বাধাঁ পাচ্ছিলাম।এই সুযোগে তানিয়া আমাকে ঠেলে বিছানায় ফেলে দিয়ে দৌড়ে পালালো।আমি শুধু ওরচলে যাওয়ার পানে তাকিঁয়ে রইলাম।
পরক্ষনেই খেয়ালহলো,ও তো ব্যথা পাইছে।যা’র কারনে কোলে করেউঠাতে হলো।বুঝতে আর বাকি রইলো না,এইবার ও আমাকে বোকা বানানো হয়েছে। পাগলিটার সাথে খু’নসুটি প্রে’ম করতে করতেই কে’টে গেল ২টা বছর।এখন কেউ কা’উকে ছাড়া কিছু ভাবতেই পারিনা।আমা’র পাগলীটা এখন গ’র্ভবতী।তাই খুব যত্ন নেই তার।আজকেই বাচ্চা হবার তারিখদি’য়েছে ডাক্তার। আমি অফিসে ছিলাম,হঠাৎই বাবার ফোন পেয়ে ছুটেগেলাম হসপিটাল।
গিয়েই শুনলাম আমা’র ঘর আ’লো করেএসেছে এক ছোট্ট রাজকন্যা।কিন্তু….আমা’র পাগলিটার কোন সাড়া শব্দ পাচ্ছিনা কেন??ভয়েআৎকে উঠলাম।অনেকের মুখেই শুনেছি,বাচ্চা জন্ম দিতেগিয়ে মা’রা গেছে অনেক মা।সে ভয়েই বাচ্চা নিতেচাইনি।কিন্তু ওর নাকি বাচ্চা লাগবেই। ওর ইচ্ছে পূরন করতে গিয়েই কি তবে……???আর ভাবতেই পারছিনা।আর একটা মিনিট ও নষ্ট না করে,দৌড়ে গেলাম কেবিনে।গিয়ে দেখি বাচ্চা টা হাত পা নাড়িয়ে খেলছে।
কিন্তু তানিয়া চোখ বন্ধ করে রাখছে।ওর নিঃশ্বা’স আছে কি নাই তা দেখার মতো ধৈর্য আমা’রছিলোনা।তাই তানিয়াকে জড়িয়ে চি’ৎকার দিয়েফেললাম। সাথে সাথেই কানের কাছে একটু ব্যথা অনু’ভব করলাম।পরে দেখি তানিয়া আমা’র আস্তে’ করে কানে কামড়দিয়ে বলল….—–কি ভাবছিলা তোমাকে একা রেখে চলে যাবো??আরে না গো,আমি চলে গেলে,তোমাকে জ্বালাবেকে??আমিও বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলাম।আরবললাম,বড্ড ভা’লোবাসি রে পাগলি তোকে।ছাড়বোনাকখনই।কেমন হলো জানাতে ভুলবেন না..?