বাগদানের আংটি যত্নে লালিত স্মৃতির মধ্যে অন্যতম হয়ে থাকে অনেকের কাছে। সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা ও আস্থার নির্দশনের সাক্ষী এই আংটি সম্বন্ধে কিন্তু মজার একটা বিষয় আছে। বাম হাতের চতুর্থ আঙুল, অনামিকায় বাগদানের আংটি পরা হয়। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, কেন? কেন অন্য কোনও আঙুলে আংটি পরানো হয় না? এই প্রশ্নের উত্তরের মূলে রয়েছে ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গে চার্চ অফ ইংল্যান্ডের সম্পর্ক ছিন্ন করার গল্প।
বাম হাতে বিয়ের আংটি পরা উচিত এই নিয়মটি দ্য বুক অব কমন প্রেয়ারে নির্ধারিত হয়েছে। দ্য বুক অব কমন প্রেয়ার হল ১৫৪৯ সাল থেকে অ্যাংলিকান চার্চের (চার্চ অব ইংল্যান্ডের অন্য নাম) ব্যবহৃত প্রার্থনা বইগুলির একটি সংগ্রহ।
চার্চ অব ইংল্যান্ড ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর অ্যাংলিকান চার্চের বিভিন্ন সেবা এবং উপাসনা বইয়ের প্রয়োজন হয়। দ্য বুক অব কমন প্রেয়ার বইটিতে মহিলার বাম হাতের চতুর্থ আঙুলে আংটি পরানোর নির্দেশ রয়েছে। এই ঐতিহ্যই অ্যাংলিকান চার্চকে ক্যাথলিক চার্চ থেকে আলাদা করে। এই বৈশিষ্ট্যটি ইউরোপের খ্রিস্টধর্মের অন্যান্য সংস্করণ থেকেও অ্যাংলিকান চার্চকে আলাদা করে।
এর আগে, বেশিরভাগ ইউরোপ এবং ক্যাথলিক চার্চ ডান হাতে বিয়ের আংটি পরানোর কথা নির্ধারণ করে। ডান হাতে বিয়ের আংটি পরা ছিল শক্তির প্রতীক।
অ্যাংলিকান চার্চ এবং ক্যাথলিক চার্চের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়াও, বাম হাতের চতুর্থ আঙুলে বিবাহের আংটি পরার নিয়মটি আলেকজান্দ্রিয়ার অ্যাপিয়ানের সঙ্গেও জড়িত। আলেকজান্দ্রিয়ার অ্যাপিয়ান ছিলেন একজন গ্রীক ঐতিহাসিক।
অ্যাপিয়ানের মতে, প্রাচীন মিশরীয়রা বিশ্বাস করত যে, দেহে একটি স্নায়ু রয়েছে যা আঙুল থেকে হৃদয় পর্যন্ত চলে গিয়েছে। অ্যাপিয়ান লিখেছেন, প্রাচীন মিশরীয়রা এই স্নায়ুটিকে একটি শিরার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছিল এবং একে লাভার্স ভেইন বলে ডাকত। এই তত্ত্ব ভুল। বাম হাতের চতুর্থ আঙুলে বিয়ের আংটি পরার নিয়ম সম্পর্কিত আরেকটি ভুল তত্ত্ব লেভিনাস লেমনিয়াস প্রচার করেছিলেন। লেভিনাসের মতে, আঙুলে সোনার আংটি ঘষলে একজন মহিলার হৃদয় প্রভাবিত হয়।
খ্রিস্টধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মে বাম হাতের চতুর্থ আঙুলে বিয়ের আংটি পরা জরুরি নয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।