হঠাৎ করেই জনসমক্ষে পা রাখলেন বসুন্ধরার এমডি আনভীর!

দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালে থাকার পর হঠাৎ করেই জনসমক্ষে এলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। শনিবার (২৯ মে) শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের (২০২১-২৪) নির্বাচন শে’ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় করেন তিনি।

এ বিষয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকাধীন ‘কালের কণ্ঠ’ ও ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ পত্রিকা দুটিতে বিশেষ গুরুত্বের স’ঙ্গে খবরও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে আনভীরকে ছাইরঙা টুপি, কালো সানগ্লাস, কালো মাস্ক, কালো টি-শার্ট ও গাঢ় নীল প্যান্ট পরিহিত বসা অবস্থায় দেখা যায়, যা খবরটির সঙ্গে প্র’কাশিত হয়েছে।

গত ১৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাটে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃ’ত্যুর ঘ’টনায় মা’মলায় একমাত্র অ’ভিযুক্ত আ’সামি সায়েম সোবহান আনভীর। ঘ’টনার পর তিনি দেশ আছেন নাকি বিদেশে পা’লিয়ে গেছেন, সেই বিষয়ে কোনো ত’থ্যই দিতে পারেননি আ’ইনশৃঙ্খলার’ক্ষাকারী বা’হিনী।

তবে পু’লিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের প্র’মাণ তারা পেয়েছেন। এ ঘ’টনায় আনভীরের কোনো বক্তব্য কোনো গ’ণমাধ্যমই পায়নি।

আনভীরের অবস্থান স’ম্পর্কে সে সময় ঢাকা মহানগর পু’লিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী দা’বি করেন, “আনভীরের দেশত্যা’গের বিষয়ে পু’লিশের কাছে কোনো ত’থ্য নেই।” আ’সামি আনভীর কোথায় আছেন?—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, “অভিবাসন ক’র্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আ’সামি (আনভীর) বাংলাদেশে আছেন।

তিনি দুটি (বাংলাদেশ ও স্লোভাকিয়া) পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে দেশত্যা’গের কোনো রেকর্ড নেই।” এর আগে বিভিন্ন গ’ণমাধ্যমে খবর প্র’কাশিত হয়, কার্গো বিমানে করে দেশত্যা’গ করেছেন সায়েম সোবহান।

তবে সেই দা’বি উড়িয়ে দিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ক’র্তৃপক্ষের পরিচালক এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, “কার্গো বিমানে কারও পক্ষে দেশত্যা’গ করা সম্ভব নয়।” তিনি আরও বলেন, “বসুন্ধরার এমডি দেশত্যা’গ করেছেন, এ ধরনের ত’থ্য যারা দিল, তাদেরই বিষয়টি পরিষ্কার করা উচিত। এ ধরনের বি’ভ্রান্তি ছ’ড়ানোর মানে নেই।”

তবে গত ২৯ এপ্রিল আনভীরের স্ত্রী-স’ন্তান ও পরিবারের কয়েক সদস্য ভাড়া করা বিমানে দেশ ছেড়েছেন—এমন খ’বর গ’ণমাধ্যমে প্র’কাশ হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল ক’র্তৃপক্ষ ও অভিবাসন পু’লিশ ক’র্তৃপক্ষ জানান, ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা দেয়। এটির গন্তব্য দুবাইয়ের আল মাকতুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

জানা যায়, চার্টার্ড ফ্লাইটের (ভাড়া করা বিমান) সদস্য ছিলেন আটজন। যাত্রী তালিকা অনুযায়ী দেশ ছেড়েছেন সায়েম সোবহান আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সোবহান, তাদের দুই স’ন্তান, ছোট ভাই সাফওয়ান সোবহানের স্ত্রী ইয়াশা সোবহান এবং তাদের মেয়ে ও দুই পরিবারের তিনজন গৃহকর্মী ডায়ানা হার্নানডেজ চাকানান্দো, মোহাম্ম’দ কাদের মীর ও হোসনে আরা খাতুন। এর আগে সায়েম সোবহান আনভীরের ছোট ভাই সাফওয়ান সোবহানও দেশ ছাড়েন।

মা’মলায় গত ২৭ এপ্রিল সায়েম সোবহানের ওপর দেশত্যা’গে নি’ষেধাজ্ঞা জারি করেন আ’দালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগাম জা’মিনের আবেদন করেন আনভীরের আ’ইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। তবে সেই জা’মিন শুনানি স্থগিত করেন আ’দালত।

অন্যদিকে আ’লোচিত এই মা’মলায় আনভীরকে গ্রে’প্তারের দা’বিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা কর্মসূচি পালন করে অনেকগুলো সামাজিক সংগঠন। গত ২৬ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার লা’শ উ’দ্ধার করে পু’লিশ।

এ ঘ’টনায় বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে আ’সামি করে মা’মলা করেন মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান। মা’মলার এজাহারে বা’দী বলেন, মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিরা।

দুই বছর আগে মুনিরা ও আনভীরের মধ্যে প’রিচয় হয়। এরপর থেকে তারা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় দেখা করতেন। তাদের প্রায় সময় মোবাইল ফোনে কথা বলতেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রে;মের স’ম্পর্ক গড়ে ওঠে।

মুনিয়ার মৃ’ত্যুর ঘ’টনার পর থেকে আনভীরকে পাওয়া যাচ্ছে না, গ’ণমাধ্যমে এ খবর প্র’কাশ হয়। তিনি দেশ বা বিদেশে আছেন, সে বিষয়েও কেউ সঠিকভাবে অবগত নন।

About reviewbd

Check Also

মাকে খুঁজছে মিরপুরে বেঁচে যাওয়া সেই ৭ মাসের শিশু হোসাইন

মিরপুরের পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওপারে পাড়ি জমিয়েছেন বাবা-মা। ভাগ্যক্রমে ছেলে হোসাইন ফিরে আসলেও বেঁচে নেই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *