মেগাসিটি খ্যাত চট্টগ্রাম মহানগরীর পাশের উপজেলা সীতাকুণ্ড। এ উপজেলার ৪নং মুরাদপুর ইউনিয়নের হাসনাবাদ ঢালিপাড়া গ্রামের ২হাজার ৪শ মিটার রাস্তা এলাকাবাসীর জন্য যেন অভিশাপ!
উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেও এখনো উপজেলায় কাঁচা রয়ে গেছে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। আর এ কাঁচা রাস্তাগুলো এখন ওই এলাকার গ্রামবাসীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাগুলো পানি-কাদায় একাকার হয়ে যায়। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হয় ওইসব গ্রামের হাজারো মানুষের। জুতা হাতে জল-কাদা মাখা শরীরে চলেন শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার লোকজন।
প্রতিবছর বর্ষার সময় এই কাঁচা সড়কটি কাদায় সয়লাব হয়ে যায়। রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় ৩-৪টি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মুরাদপুর ইউনিয়নের। শুধু তাই নয় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীর ও চাকরিজীবীদের। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের চলাচল।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, শুধুমাত্র যাতায়াতের কারণে এই গ্রামের অনেক ছেলে-মেয়ের বিয়ে হচ্ছেনা।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাতায়াত ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় মানুষের অসুখ-বিসুখ হলে চিকিৎসা নিতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তা কাদায় ভরে যায় কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এমন কি হেঁটেও চলাচল করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠে। গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বলেন, বৃষ্টির সময় অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবার শুকনো মৌসুমেও রাস্তায় ধুলোর কারণে কাশিসহ অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
তারা জানান, এই রাস্তা দিয়ে ৩/৪ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত অথচ রাস্তাটি অভিভাবকহীন। গ্রামে কোন লোক অসুস্থ্য হলে তাকে দুইজন লোকে ভারে বহন করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। কারণ অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। এমন কি গ্রামে কেউ যদি মারা যায় তার দাফনের কাজ সম্পূর্ণ করতে বেশ কষ্ট ভোগ করতে হয়।
হাসনাবাদ, পূর্ব-মুরাদপুর,পশ্চিম -মুরাদপুর এই তিন গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি মেরামত করতে। কিন্তু কেউ আমলে নিচ্ছেন না। তাছাড়া গ্রামের উৎপাদিত কৃষিপণ্যগুলো রাস্তা খারাপের জন্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করা সম্ভব হয় না। এতে করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে মারাত্মক ধস নামছে। কৃষক ও ক্ষুদ্র খামারীরা মূলধন হারিয়ে পুনরায় চাষাবাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
স্থানীয় অধিবাসী আবদুল্লাহ আল নোমান নামে এক যুবক বলেন, রাস্তাটি এতই খারাপ যে, এই গ্রাম থেকে কেউ বিয়েশাদীর মত সম্পর্ক অন্য এলাকার মানুষ করতে চাইনা। রাস্তার বেহালদশার কারণে মূমুর্ষ রোগীকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। প্রায় সময়ই লক্ষ্য করা যায় হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বেই রোগী পথেই মারা যাচ্ছে।
তাছাড়া স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া গ্রামের বহু শিক্ষার্থী রয়েছে। পরীক্ষা কিংবা ক্লাসে যোগদান করতে বাড়ি থেকে স্কুল কলেজে যেতে হয়। রাস্তার বেহাল দশার কারণে তারাও প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এব্যাপারে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, হাজারো মানুষের চলাচলের একটা রাস্তা এতো খারাপ হতে পারে না। তিনি সংশ্লিষ্টদের সাথে বসে একটা সমাধানের আশ্বাস দেন।
স্থানীয় মুরাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহেদ হোসেন নিজামী বাবু বলেন, এই রাস্তাটি দীর্ঘ ৪০ বছর কোন কাজ হয়নি। কিছুদিন আগে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে রাস্তায় মাটি দেওয়া হয়েছে। এতে বৃষ্টি হওয়ার কারণে কাদা জমে গেছে। বর্ষা মৌসুম শেষ হলেই কাজ করা হবে। প্রকল্প এলজিআরডিতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।