গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কয়েকটি গ্রামে কিছুদিন ধরে অচেনাপ্রাণীর আক্রমণের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামবাসীর। প্রাণীটির হামলায় একজনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে। আক্রমণের বিবরণ, পায়ের ছাপও ও বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষা করে প্রাণীটি শনাক্ত করেছে বিশেষজ্ঞ দল। তারা বলছেন, এটি কোনো অপরিচিত প্রাণী নয়। একে খেঁকশিয়াল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তারা।
অচেনা ওই প্রাণী শনাক্তে ঢাকা থেকে তিন সদস্যের একটি বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ দল গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিশেষজ্ঞ দলের কর্মকর্তারা হলেন- মো. কামরুদ্দীন রাশেদ, মাহাবুব-ই-খোদা জুয়েল ও গাজী সাইফুল তারিক। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত আতঙ্কে দিন কাটানো গ্রামগুলো ঘুরে দেখেন। আক্রান্ত লোকজনের বর্ণনা শোনেন।
এই প্রাণীকে জলাতঙ্কগ্রস্ত খেঁকশিয়াল বলে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করছেন বিশেষজ্ঞ কামরুদ্দীন রাশেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাণীটি অচেনা জন্তু কিংবা কোনো হিংস্র প্রাণী নয়, প্রাণীটি মূলত জলাতঙ্কগ্রস্ত খেঁকশিয়াল। বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ এলাকায় দুই প্রজাতির খেঁকশিয়ালের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
তবে এসব খেঁকশিয়াল জলাতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার শরীরের পরিবর্তন ঘটে। হিংস্র মনোভাব থাকায় সুযোগ পেলেই তারা মানুষের ওপর হামলা করে বসে।’ তবে প্রাণীটিকে নিয়ে এলাকার মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ঢাকা থেকে আসা দলের সঙ্গে কাজ করেন রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পাঁচজন কর্মকর্তা। তারা হলেন- মো. রাহাত হোসেন, বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির, ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জার মোহাম্মদ হেলিম রায়হান, জুনিয়র ওয়াইল্ড লাইফস্কাউট সোহেল রানা ও বনপ্রহরী লালন উদ্দিন প্রমুখ। দল দুটিকে সহায়তা করে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘তীর’।
তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি মো. জিসান মাহমুদ জানান, বিশেষজ্ঞ দল আক্রান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। তারা প্রাণীটির পায়ের ছাপসহ বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। বিশেষজ্ঞ দলের বিশ্লেষণ মতে এটি কোনো অপরিচিত প্রাণী নয়। বিশেষজ্ঞ দল এটিকে শেয়াল হিসেবে চিহ্নিত করেন।