হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেওয়া কুষ্টিয়া পুলিশের সেই সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) গোলাম রাব্বানীকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
এর আগে গত ৪ এপ্রিল গোলাম রাব্বানীকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৩ মে চাকরিচ্যুতির পর ২৬ মে বিকালে গোলাম রাব্বানী শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়স্থ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে চরম ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে নানা ধরনের বক্তব্য দেন।
৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে গোলাম রাব্বানী জনগণকে উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আল্লাহ তোমার জন্য যথেষ্ট। কোরআন হাতে নেন। র্যাব-পুলিশ সব দৌড় মারবে। র্যাব-পুলিশ, এসপি কাউকে দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রকৃত মুসলিম কাউকে ভয় পায় না। জানমাল, ইজ্জত, ধর্ম, স্ত্রী, পুত্র-সন্তান সব বিসর্জন দেব আল্লাহর জন্য। তিনি আরো বলেন, চোরকে চোর বলা পুলিশের দায়িত্ব। ডাকাতকে ডাকাত বলা পুলিশের দায়িত্ব। আলেমকে আলেম বলাও পুলিশের দায়িত্ব। রবের পক্ষ থেকে কোরআন নাজিল হয়েছে। সবাইকে কোরআন মানতে হবে। পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জীবন দিয়া যাব। প্রকাশ্যে গুলি করবে? গুলি লাগা। বহুত গুলি ফুঁটাইছি আমি। অস্ত্রকে মুসলমান ভয় পায়না।’
গত গত ৩ এপ্রিল ওই পুলিশ কর্মকর্তা ফেসবুকে লাইভে বলেন, ‘মামুনুল হক হুজুরের একটি ভিডিও দেখলাম । ওই ভিডিওতে দেখা গেছে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে একটা রিসোর্টে গেছেন। আমার প্রশ্ন হলো, যে অধিকাংশ সাংবাদিকরা তার কাবিননামা দেখতে চাচ্ছে। আপনাকে এই অধিকার কে দিয়েছে? আপনি যে কাবিননামা দেখবেন আপনাকে এই অধিকার কি রাষ্ট্র দিয়েছে? কোন সাংবাদিকদের যদি জানা থাকে এই ধরণের আইনসঙ্গত বিষয় তবে আমাকে জানান। আমি তো পুলিশে চাকরি করি। আমার এটা জানা নেই’। তার লাইভটি ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে গত ৪ এপ্রিল এএসআই গোলাম রাব্বানীকে সাময়িক বরখাস্ত করে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
গোলাম রাব্বানীর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকায় বাসা ভাড়া থাকেন। তিনি কুষ্টিয়ার ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. মুহিদ উদ্দিনের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তে দোষী প্রমাণিত হন রাব্বানী। কুষ্টিয়ার পুলিশ মোঃ খাইরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রকাশ্যে হান্ড মাইকে বক্তব্য প্রদানের পর চাকুরিচ্যুত গোলাম রাব্বানীকে থানায় নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তার পরিবারের লোকজন তাকে দিনাজপুরে নিয়ে চলে যান।