একটা বয়সের পর হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। হাড়ের সু’স্থতা বজায় না থাকলে তা থেকে হতে পারে অস্টিওপোরোসিস। এমনকি বয়স বাড়ার স’ঙ্গে স’ঙ্গে হাড় ভে’ঙে যাওয়ার ঝুঁ’কি বেড়ে যেতে পারে। উল্লেখ ক’রতেই হয়, আম’রা বেশির ভাগই হাড়ের সু’স্থতা নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না।
যার ফলে হাড় প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থেকে ব’ঞ্চিত হয়। হাড়ের সু’স্থতার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি শ’রীরকে ক্যালসিয়াম শুষে নিতে সহায়তা করে। এ কারণে হাড় সুরক্ষিত রাখতে খাদ্যতালিকার দিকে অবশ্যই নজর দেয়া জ’রুরি। হাড়ের সু’স্থতায় যেসব খাবার খাওয়া জ’রুরি—
দুধ ও টক দই: শ’রীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ ক’রতে দুধের বিকল্প নেই। কিন্তু ডেইরি মিল্কের পক্ষপাতী নন অনেকেই। তাতেও রয়েছে সমাধান। সয়ামিল্ক, আমন্ড দুধ বা নারকেলের দুধেও পাবেন পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি। তবে এসব দুধ কেনার আগে প্যাকে’টের গায়ের লেবেলে উপাদানগুলো কী মাত্রায় রয়েছে, তা দেখে নিন।
যারা দুধ খেতে পছন্দ করেন না, তারা খাদ্যতালিকায় রাখু’ন টক দই। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ডি। প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহি’দা পূরণে এক কাপ টক দই খেতে পারেন। এক কাপ টক দইয়ে রয়েছে ৩০ শতাংশ ক্যালসিয়াম ও ২০ শতাংশ ভিটামিন ডি। স’ঙ্গে পাবেন পর্যাপ্ত প্রোটিন।
ডিম: ব্রেকফাস্টে প্রায় রোজই ডিম থাকে। ডিমে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন ডি, যা হাড়ের সু’স্থতা র’ক্ষায় গু’রুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পা’লন করে। তবে ডিমে ভিটামিন থাকে কেবল কুসুমে। তাই কুসুম সরিয়ে না ফে’লে সাদা অংশের স’ঙ্গে ওমলেট করে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
সবুজ সবজি: হাড় মজবুত রাখার জন্য ক্যালসিয়ামের বিকল্প নেই। দুধ থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। কিন্তু গাঢ় সবুজ বিভিন্ন সবজি থেকেও তা পাওয়া সম্ভব। সবুজ পাতাযুক্ত শাক-সবজির মধ্যে বাঁ’ধাকপি, পালংশাক, মূলা’শাক, ব্রোকলি ও সয়াবিন হতে পারে দারুণ উদাহরণ। এক কাপ পাতাযুক্ত সবজিতে থাকে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। এছাড়া গাঢ় সবুজ সবজিতে পাওয়া যায় ভিটামিন কে, যা অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁ’কি হ্রাস করে।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: হাড়ের ঘনত্ব র’ক্ষায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড অত্যন্ত গু’রুত্ব পূর্ণ একটি উপাদান। কডলিভার অয়েলে রয়েছে উচ্চমানের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এতে আরো রয়েছে ভিটামিন ডি ও ভিটামিন এ। শুধু এক টেবিল চামচ কডলিভার অয়েল রোজ আপনার শ’রীরে এ তিনটি উপাদানের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করবে। তবে এক টেবিল চামচের বেশি কডলিভার অয়েল খাওয়া উচিত নয়, কারণ ভিটামিন এ’র আধিক্য স্বা’স্থ্যের পক্ষে ভালো নয়।
মিষ্টি আলু: হাড়ের সুস্বা’স্থ্যের জন্য প্রয়োজন রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামের। যদি শ’রীরে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি থাকে, তাহলে ভিটামিন ডি’র ভারসাম্য র’ক্ষায় স’মস্যা হয়। এমন অবস্থা হাড়ের ওপর প্র’ভাব ফেলতে পারে।
অন্যদিকে পটাশিয়াম শ’রীরের ক্ষারীয় পদার্থগুলোকে নি’ষ্ক্রিয় করে দেয়, যাতে করে হাড় থেকে ক্যালসিয়াম উপাদান বেরিয়ে যেতে না পারে। এ দুটি উপাদান সহজে পেতে চাইলে রোজ একটি করে মাঝারি সাইজে’র মিষ্টি আলু লবণ ছাড়া বেক করে খান। এতে রয়েছে ৩২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম ও ৫৪২ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
সাইট্রাস ফল: যারা আঙ্গুর খেতে ভালোবাসেন, তারা ব্রেকফাস্টে যোগ ক’রতে পারেন ফলটি। সাইট্রাস ফলে রয়েছে ভিটামিন সি, যা হাড়ের ক্ষয়রো’ধ করে। জা’নেন কি? একটি মাত্র লাল আঙ্গুরে রয়েছে ৯১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, যা আপনার সারা দিনের ভিটামিন সি’র চাহি’দা পূরণ করবে! সাইট্রাস ফলের তালিকায় রাখা যেতে পারে কমলালেবু, লেবু ও জাম্বুরা।
আমন্ড: ব্রেকফাস্টে আমন্ড বাটার খেতে পারেন। দুই টেবিল চামচ আমন্ড বাটারে ১১২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। একই পরিমাণ আমন্ড বাটারে আরো পাওয়া যায় ২৪০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। তাছাড়া হাড় পরিপুষ্ট ক’রতে প্রোটিনসহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান পাওয়া সম্ভব আমন্ড বাদাম থেকে।
ক্যালসিয়ামযুক্ত পানীয়: হাড় শ’ক্তিশালী ক’রতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ জুস বা পানীয় পান ক’রতে পারেন। ব্রেকফাস্টে শুধু কমলার জুসই পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের জোগান দিতে পারে না। এজন্য তিনটি কমলার রসে পাঁচ-ছয়টি আঙ্গুর দিয়ে জুস করে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া একটি আপেল, দুটি ব্রোকলির ডাটা ও কিছু পরিমাণ বাঁ’ধাকপির পাতা দিয়ে জুস তৈরি করে নিতে পারেন।
শুকনা বড়ই: স্ন্যাকস হিসেবে ড্রাই ফ্রুটের বদলে শুকনা বড়ই খেতে পারেন। সুস্বাদু তো বটেই, গবেষণায় দেখা গেছে, রোজ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ শুকনা বড়ই খেলে হাড় মজবুত হয় ও ক্ষয়রো’ধ হয়।
ঝোলা গুড়: খাবারে প’রিশোধ িত সাদা চিনির পরিবর্তে ঝোলা গুড় খেতে পারেন। এক টেবিল চামচ ঝোলা গুড়ে রয়েছে ৪১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। টক দই, ওটমিল ও স্মুদিতে মধুর পরিবর্তে খেতে পারেন। সূত্র: ওয়েবএমডি ও এভরিডে হেলথ