নিখোঁজের ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো সন্ধান মেলেনি আলোচিত ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দিবাগত রাত থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার। তবে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিশ্বাস খুব শিগগিরই আদনানের নিখোঁজ রহস্যের জট খুলবে।
এদিকে নিখোঁজ আবু ত্ব-হা আদনানের সন্ধান চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সোমবার (১৪ জুন) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়ার ভেরিফায়েড টুইটার থেকে এ বিবৃতি দেওয়া হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়ার ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ত্ব-হা ‘নিখোঁজ’ সংক্রান্ত বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদন শেয়ার করা হয়েছে। এর সঙ্গে বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান ও তার তিন সঙ্গী গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন। আবু ত্ব-হা ও তার সঙ্গীদের অবস্থান শনাক্তে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার দাবি জানাচ্ছে অ্যামনেস্টি। আর তারা যদি রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকে, তাহলে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
আদনানের স্বজন ও প্রতিবেশীদের ভাষ্য, একসময় ভালো ক্রিকেট খেলতেন আদনান। রংপুরের ক্রিকেট অঙ্গনে সবার পরিচিত মুখ ছিলেন তিনি। রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন রংপুর কারমাইকেল কলেজে। সেখান থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন তিনি। স্নাতকে পড়ার সময় থেকেই ধর্মের প্রতি তাঁর ঝোঁক বাড়তে থাকে। বাবার মৃত্যুর পর রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের নানার বাড়িতে বড় হয়েছেন তিনি। ৩১ বছর বয়সী আদনান ইসলাম ধর্মের প্রচুর বই পড়তেন এবং গবেষণা করতেন। দর্শনে স্নাতকোত্তর করা আদনান অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন একজন ভালো ইসলামী বক্তা। তিনি উগ্রবাদকে সমর্থন করতেন না বলেও দাবি করেছেন স্বজনরা।
গত ১০ জুন বিকেলে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন আদনান। রাত আড়াইটার দিকে স্ত্রী হাবিবা নূরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে শেষ কথা হয় তাঁর। আদনানের সঙ্গে থাকা আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনও নিখোঁজ। তাঁদের সবার মোবাইল ফোনও বন্ধ।
আদনানের মা আজেদা বেগম বলেন, ‘রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়েছে। কিন্তু আমার ছেলের সন্ধানে পুলিশের কোনো তৎপরতা পাচ্ছি না’
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকায়। বাড়ি রংপুরে হওয়ায় আদনানের মায়ের করা জিডির সূত্র ধরে অনুসন্ধান চলছে। আশা করি শিগগিরই এই রহস্যের জট খুলবে।’