নতুন করে একি বললেন ত্ব-হার দ্বিতীয় স্ত্রীর

আলোচিত ইসলামি বক্তা হিসেবে পরিচিত আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান নিখোঁজের ৮দিন পরে অবশেষে বাড়িতে ফিরেছে এসেছেন।সে এতদিন ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপন করেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে। তবে পরিবারের একটি সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের দিনই ত্ব-হার অবস্থান সম্পর্কে জানত পরিবার। তার নিরাপত্তার স্বার্থে এ কথা গোপন করা হয়েছিল।

ত্ব-হাকে ডিবি হেফাজতে নেওয়ার পর শুক্রবার রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন ডিবি কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং করেন। তিনি জানান, শুক্রবার বাড়িতে ফিরে আসার খবর পুলিশ জানতে পেরে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান পারিবারিকভাবে ও মানসিক বিষাদগ্রস্থ ছিলেন। সে কারণে তিনি এতদিন আত্মগোপনে ছিলেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিখোঁজ আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনানের সন্ধান ও অবস্থান আরও আগেই জানতে পারেন তাদের পরিবার। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে তারা সেটা গোপন রাখতে চেয়েছেন। ত্ব-হার পরিবারের এমন আচরণে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে ত্ব-হা কী আত্মগোপনে ছিলেন? তার পরিবারের সদস্যরা কি চান না তিনি কোথায় ছিলেন এটা সাধারণ মানুষ জানুক? কিংবা তার নিখোঁজের বিষয়টি কী পারিবারিক কোনো বিরোধের কারণে? এমন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ মানুষের মনে।

ত্ব-হার সন্ধান যে আগেই তার পরিবার পেয়েছেন তা পরিবারের একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে তার পরিবার নিরাপত্তার স্বার্থে সেটা গোপন করেছেন। জানা গেছে, ত্ব-হা’র স্ত্রী যেদিন সংবাদ সম্মেলন করেন সেদিনেই ত্ব-হা’র সন্ধান পান তার পরিবার। পুলিশি ঝামেলা হবে বলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান গত ১০ জুন নিখোঁজ হন। নিখোঁজের সময় আদনান রাজধানীর মিরপুরে অবস্থান করছিলেন। তখন রাত ২ টা ৩৭ মিনিট। সর্বশেষ কথা হয়েছিল তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন্নাহার সারা’র সঙ্গে। সর্বশেষ মোবাইলে কথা বলার ঘটনাস্থল থেকে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসায় মিরপুর যেতে গুগল ম্যাপে দেখা গেছে ওই পথের দূরত্ব ছিল ৬ দশমিক ৪ কিলোমিটার। সেখানে পৌঁছাতে সময় লাগতো ১৮ মিনিট। ওই ১৮ মিনিটের ভেতর লুকিয়ে ছিল তার নিখোঁজ রহস্য।

সে বিষয়ে পুলিশের পক্ষে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর থেকে তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে সেখান থেকে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তার এক সফর সঙ্গী বগুড়া জেলার শিবগঞ্জের বাসিন্দা মোহাম্মদ ফিরোজ আলম, গাড়ি চালক রংপুর নগরীর উত্তর আশরত পুরের বাসিন্দা আমির হোসেন ফয়েজ ও অপর সফর সঙ্গী রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীর কাফ্রিখাল এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মুহিতসহ গাইবান্ধায় যান। সেখানে গাইবান্ধার ত্রিমোহনী এলাকায় তার বন্ধু সিয়াম ইসলামের বাসায় এতদিন আত্মগোপন করে ছিলেন।

শুক্রবার সকালে গাইবান্ধা থেকে তার ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বগুড়ায় মোহাম্মদ ফিরোজ আলমকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি চালকসহ তারা তিনজন রংপুরে আসেন। আসার পথে মিঠাপুকুরের জায়গীর কাফ্রিখালে আব্দুল মুহিতকে নামিয়ে দিয়ে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান গাড়ি চালকসহ বেলা সাড়ে ১২টায় রংপুরে শশুড় বাড়িতে প্রথম স্ত্রীর কাছে ফিরে আসেন।

ডিবি পুলিশ খবর পেয়ে বেলা ৩টায় নগরীর আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টার পাড়ায় তার শ্বশুর আজহারুল ইসলামের বাসা থেকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরে গাড়ি চালকসহ অপর দুই সঙ্গীকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। সেখানে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকাল সাড়ে চারটায় ডিবি পুলিশের পক্ষে প্রেসব্রিফিং দেওয়া হয়। সুত্র: যুগান্তর

About reviewbd

Check Also

কৌতুক অভিনেতা ‘ভাদাইমা’ আর নেই

‘ভাদাইমা’ খ্যাত কৌতুক অভিনেতা আহসান আলী (৫০) মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন)। রোববার (২২ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *