করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। আগামী সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব অফিস আদালত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন বন্ধ থাকবে।শুক্রবার সরকারের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।
নতুন এই নির্দেশনা অনুযায়ী, সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। জরুরী কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না।
এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচলও বন্ধ থাকবে।অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজের জন্য শুধু যানবাহন চলাচল করতে পারবে।গণমাধ্যম এই বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আদেশ আগামীকাল (২৬ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’-এর সুপারিশ করে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর বিশেষ ডেল্টা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে এবং দেশে ইতিমধ্যে করোনার প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এই প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারা দেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশোর্ধ্ব জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। রোগ প্রতিরোধের জন্য খণ্ড খণ্ড ভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সংগেও আলোচনা করা হয়েছে। তাঁদের মতামত অনুযায়ী, যেসব স্থানে পূর্ণ শাটডাউন (Shutdown) প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।
এরপর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও শাটডাউন-এর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জাতীয় পরামর্শক কমিটি যে সুপারিশ করেছে, সেটি যৌক্তিক। ইতিমধ্যে সরকারেরও এই ধরনের প্রস্তুতি আছে। সরকারও কঠোর বিধিনিষেধের চিন্তা-ভাবনা করছে। যে কোনও সময় সরকার তা ঘোষণা দেবে।
এদিকে শুক্রবার এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, আগামীকাল আমরা প্রজ্ঞাপন দেব। আমাদের তথ্য অফিসার তথ্য দিয়েছেন। আমরা এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন বাড়াব। এরপর যদি প্রয়োজন হয়, আমরা লকডাউন বাড়াব।
এ সময় তিনি জানান, মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কাজ করবে পুলিশ, বিজিবি এবং মোতায়েন থাকতে পারে সেনাবাহিনী।