পরিসরের তিন দিনের ‘লকডাউনের’ প্রথম দিন আজ। শুধু পণ্যবাহী যানবাহন আর প্রধান সড়ক ছাড়া অন্যান্য সড়কে রিকশা চলাচলের অনুমতি থাকলেও রাজপথ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যক্তিগত যানবাহন।
চলাচল নিয়ন্ত্রণে চেকপোস্টে কড়াকড়ি আরোপ করেছে পুলিশ। মোটরসাইকেলে দুইজন আরোহী দেখলেই দেওয়া হচ্ছে মামলা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রীদের।
সোমবার (২৮ জুন) সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর, প্রগতি সরণি, এয়ারপোর্ট সড়কসহ বিভিন্ন এলাকার প্রধানসড়কগুলো ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। সকাল ১১টার দিকে এয়ারপোর্ট সড়কে খিলক্ষেত থেকে বনানীগামী অংশে যানজটের লম্বা সারি দেখা যায়। হোটেল র্যাডিসনের সমানে এসে দেখা যায়, পুলিশ চেকপোস্টের নিয়মিত কার্যক্রমের কারণে ওই যানজট! যানবাহনের বেশিরভাগই ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রাইভেটকার, জিপ ইত্যাদি।
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসের গাড়িও দেখা যায়। এছাড়া মোটরসাইকেল এবং কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশাও দেখা যায়। চেকপোস্টে পুলিশের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কোনো মোটরসাইকেলে দুইজন আরোহী থাকলেই সেগুলোকে থামানো হচ্ছে। থামানো হচ্ছে সিএনজি এবং রিকশাকেও। সড়কে বের হওয়ার উপযুক্ত কারণ উপস্থাপন করতে না পারলে সেসব যানবাহন ও চালকদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা।
এই চেকপোস্টে দায়িত্বরত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মোহাম্মদ সজীব বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে এক ঘণ্টায় প্রায় ২০টির বেশি মামলা দায়ের করেছি। এগুলোর বেশিরভাগই মোটরসাইকেলে দুইজন আরোহণ করার জন্য। এটা নিষেধ আছে। এছাড়াও সিএনজি এবং রিকশা রয়েছে। রিকশার চলাচলের অনুমতি আছে শুধু পাড়া-মহল্লার সড়কে, প্রধান সড়কে না আর এমন ভিআইপি সড়কে তো নই। তবুও অনেকে রিকশা নিয়েই বেরুচ্ছেন।
এমন যানবাহনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? জানতে চাইলে ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, আমরা আসলে মামলা দিতে দিতেও ক্লান্ত। কত মামলা দেবো বলেন! হঠাৎ হঠাৎ মনে হয় মামলা যে কেন দিচ্ছি সেটাই বুঝতেছি না। ‘লকডাউনে’ সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা ছিলো কিন্তু! সবাই রাস্তায়। কিছু প্রাইভেটকার থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে বুঝেছি যে, সেটি ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে। কিন্তু চালক ও যাত্রীদের জিজ্ঞেস করলে বলছে যে তারা আত্মীয়। এখন তারা যে আত্মীয় না এটা প্রমাণ করতে হলে সবার বাসায় বাসায় যেতে হবে।
এটা কী সম্ভব? সকাল থেকে মাঠপর্যায়ে লকডাউনের পরিস্থিতি কেমন দেখছেন জানতে চাইলে এখানকার দায়িত্বরত ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (টিআই) কামরুল হাসান বলেন, লকডাউন যে আসলে কী মানুষ সেটি বুঝতে চাইছে না। এই যে দেখেন শত শত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি। সিএনজিতে একজনের বেশি আরোহী পেলে ব্যবস্থা নিচ্ছি, গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী পেলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। মোটরসাইকেলে একজনের বেশি আরোহী পেলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু শত শত মোটরসাইকেল। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, সামনেও চেকপোস্ট আছে তারাও ব্যবস্থা নিচ্ছে।
প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহকালেই একটি মোটরসাইকেলে দুইজন আরোহী নিয়ে যেতে দেখা যায়। তাদেরকে পুলিশ থামার সংকেত দিলেও বাইক না থামিয়ে চলে যেতে চাইলে চ্যালেঞ্জ করে পুলিশ। (ভিডিও) এমন ঘটনাকে উদ্ধৃতি দিয়ে সার্জেন্ট সজীব প্রতিবেদককে বলেন, দেখছেন অবস্থা? আমরা এখানে দায়িত্ব পালন করছি, থামার সংকেত দিলাম কিন্তু থামে না। নাগরিকদের কেউ কেউ এমন অসহযোগিতা করছেন যেটা কাম্য নয়।