বর্ষায় ফ্লু সংক্রমণ বেড়ে যায়। এর ফলে জ্বর, সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথার সমস্যায় ছোট-বড় সবাই কমবেশি ভুগে থাকেন! আর ঠান্ডা লাগলেই অনেকের গলা ব্যথা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও যাদের টনসিলের সমস্যা আছে, সামান্য ঠান্ডাতেও তাদের গলা ব্যথা বেড়ে যায়।
যা খুবই কষ্টদায়ক। খাবার বা পানি গিলতে প্রচণ্ড কষ্ট হয় গলা ব্যথা হলে। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। কারণ কয়েকটি ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলেই গলা ব্যথা থেকে দ্রুত স্বস্তি মিলবে। কয়েকটি প্রাকৃতিক ভেষজের সাহায্যেই প্রচণ্ড গলা ব্যথা মহূর্তেই কমানো সম্ভব। জেনে নিন গলা ব্যথা সারাবে কোন প্রাকৃতিক দাওয়াই-
মেথি= মেথির অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। গলা ব্যথা সারাতে মেথি বীজ হতে পারে দুর্দান্ত এক প্রতিকার। মেথি বীজ বা তেল এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন। গলা ব্যথা ও ফোলাভাব সারাতে মেথি চা পান করলে আরাম মিলবে। গবেষণায় দেখা গেছে, মেথি ব্যথা উপশম করতে পারে। কারণ এতে আছে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান, যা ক্ষতিকর ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভবতী নারীদের উচিত মেথি এড়িয়ে চলা।
রসুন= রসুনে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। এতে আরও আছে অ্যালিসিন নামক একটি অর্গানসালফার যৌগ। যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত রসুন খেলে সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্তি মেলে। তাজা রসুনে আরও আছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য।গলা ব্যথা দ্রুত সারায় রসুনে থাকা প্রদাহবিরোধী উপাদানসমূহ। এ ছাড়াও রসুন খাওয়ার ফলে দাঁতে লুকিয়ে থাকা জীবাণু ধ্বংস হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি ঘটে। রসুন খাওয়ার পর চেষ্টা করুন দাঁত ব্রাশ করতে।
বেকিং সোডা= বেকিং সোডার কার্যকারিতা অনেক। গলা ব্যথা সারাতে বেকিং সোডা ও লবণ পানি দিয়ে গার্গেল করতে পারেন। এই দ্রবণে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানসমূহ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে পারে। ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের পরামর্শ অনুসারে, ১ কাপ গরম পানি, ১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা এবং ১/৪ চা চামচ লবণ মিশিয়ে প্রতি তিন ঘণ্টা পরপর গার্গেল করলে দ্রুত গলা ব্যথা সেরে যায়।
গোলমরিচ= শুধু রান্নায় নয়, শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার দাওয়াই হলো গোলমরিচ। বিশেষ করে সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি দেয় এতে থাকা উপাদান। গোলমরিচে মেন্থল বৈশিষ্ট্য আছে। যা পাতলা শ্লেষ্মা, গলা ব্যথা ও কাশি থেকে তাৎক্ষণিত স্বস্তি দেয়। এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্যও আছে। যা বিভিন্ন ব্যথা নিরাময়ে কাজ করে। আস্ত গোলমরিচের দানা পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মতো করে পান করলে দ্রুত গলা ব্যথায় স্বস্তি মিলবে।
মধু= চায়ের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারে গলা ব্যথা সারাতে। এটি গলা ব্যথার সাধারণ ঘরোয়া প্রতিকার। গবেষণায় দেখা গেছে, মধু কাশির সমস্যা সমাধানে বেশ কার্যকর। অন্যান্য গবেষণায় দেখা যায়, মধুতে থাকা উপাদানসমূহ বিভিন্ন ক্ষত নিরাময় ও গলার প্রদাহে দ্রুততর নিরাময় ঘটায়।