রংপুরের পীরগঞ্জে করোনার টিকা নেয়ার পর আলেফ উদ্দীন (৬৫) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তিনি একই ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত রতিউল্লাহর ছেলে। তিনি পেশায় এক দিনমজুর ছিলেন।
শনিবার দুপুর ১ টার দিকে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদে টিকাদান কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। জেলা সিভিল সার্জন হিরম্ব কুমার রায় এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বজনরা বৃদ্ধের মরদেহ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অবস্থান করেছেন। তাদের অভিযোগ টিকা নেওয়ার কারণে আলেফ উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আলেফ উদ্দিন সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে টিকা নিতে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে যান। ৩০ নম্বর সিরিয়ালে তাকে টিকা দেওয়া হয়। এরপর কেন্দ্রে কিছুক্ষণ অবস্থান করে তিনি বাড়িতে যান। বাড়ি থেকে স্থানীয় বাজারে গিয়ে চা খেয়ে আবার বাড়িতে গেলে তার শরীর খারাপ লাগতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।
আলেফের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী হাফিজা বেগম বলেন, সকালে খায়া-দায়া বাড়ি থাকি বের হইচে। টিকা নিয়ে বাড়ি আলচে। আইসার পর কেমন কেমন করছিল। দেখতে দেখতে লোকটা মরি গেল।
তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, টিকা দিতে সমস্যা হইচে। কমবেশি হইচে। সে জন্য মারা গেইছে।
এদিকে আলেফের মৃত্যুর খবর পেয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা মরদেহ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিক্ষোভ করা শুরু করে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ চলে এসে ঘটনা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় নিরাপত্তার স্বার্থে টিকাদান কর্মীদের একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে পুলিশ।
পরে পুলিশের রংপুর ডি সার্কেলের এএসপি কামরুজ্জামান, পীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডল, ভাইস চেয়ারম্যান শফিউর রহমান মন্ডল মিলন, পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিরোদা রানী রায়, ও পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, দুপুর ১২ টার দিকে আলেফ উদ্দিন টিকা নেন। এরপর তিনি বাড়িতে যান। বাড়ি যাবার পর এক ঘণ্টা পর মারা যান। শুনেছি আগে থেকেই তার হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট ছিল। তবে কী কারণে মারা গেছে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।