এবছর ঈদুল আজহার আগে রাজধানীর গরুর হাটে গরুটিকে বিক্রির উদ্দেশ্য নিয়ে যান কৃষক আব্দুল গফফার। হাটে গরুটির দাম উঠেছিল ৮ লাখ টাকা। তিনি চেয়েছিলেন গরুটি ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করতে। সেই দাম আর পাননি বলে বিক্রিও করতে পারেননি। পরে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন গরুটি। কিন্তু সেই গরুটিকে আর বিক্রিই করতে পারলেন না তিনি। শুক্রবার (০৬ আগস্ট) গরুটি মারা গেছে।
আব্দুল গফফার কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের গৌরঙ্গপুর গ্রামের মৃত সাহের গাইনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক। নিজের পালিত গরুটিকে হারিয়ে এখন মাথায় হাত অসহায় কৃষকের। আব্দুল গাফফার জানান, রাজধানীর একটি হাটে গরুটির দাম উঠেছিল ৮ লাখ টাকা। দামে বনিবনা না হওয়ায় গরুটি বিক্রি করিনি।
বাড়িতে ফিরিয়ে আনি। গরুটি হঠাৎ অসুস্থ হলে ইউনিয়নের পশু চিকিৎসক ইব্রাহিম হোসেনকে খবর দেই। তিনি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের চিকিৎসক মাজবুর রহমানকে দেখানোর পরামর্শ দেন। মাজবুর গরুর শরীরে ৫-৭টি ইনজেকশন পুশ করেন ও কিছু পাউডার দেন। পরে গরুটি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে অনেকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেনি। অবশেষে শুক্রবার গরুটি মারা যায়।
অভিযোগের বিষয়ে কেরালকাতা ইউনিয়ন কৃত্রিম প্রজননের টেকনিশিয়ান ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমি ওই গরুর চিকিৎসা করিনি। তারা আমাকে চিকিৎসার জন্য বলেছিল। আমি উপজেলা অফিসের পশু চিকিৎসক মাজবুর রহমানের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলাম। এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাজবুর রহমান গরুটিকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
তবে সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। যতটুকু জানতে পেরেছি, এই কৃষক খুবই অজ্ঞ মানুষ। তিনি কিছুই বোঝেন না। গরুটি অসুস্থ হওয়ার পর প্রথমে ইউনিয়ন টেকনিশিয়ান ইব্রাহিম হোসেনকে জানান।
তারপর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাজবুর রহমান এক দিন চিকিৎসা দিয়েছেন। এরপর গরুটি সুস্থ হয়ে যায়। তারপর গরুটি আবার অসুস্থ হলে বার বার ইব্রাহিমকে জানিয়েছে। তবে ইব্রাহিম উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করেনি। এরপর গরুটি মারা গেছে।
কলারোয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর জানান, কৃষক আব্দুল গফফার খুব অসহায় মানুষ। ভুল চিকিৎসায় দামি গরুটি মারা যাওয়ায় তিনি মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। থানাতে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। তিনি মামলা করতে চাননি। তবে অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি।