শিক্ষিত নারীরা দেশ ছাড়ার ছক কষছেন

‘আজও ক্লাস করতে যেসব মেয়ে কলেজে গিয়েছিল তাদের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে তালেবান। ব্যাংকের নারী কর্মীদেরও ফেরত পাঠানো হয়েছে বাসায়। এটা ভীষণ কষ্টের। এর মধ্যেও আজ নারীরা পোস্টার হাতে রাস্তায় নেমেছে। তাদের সাহস দেখে প্রশংসা না করে উপায় নেই। আফগানিস্তানের নারী হয়ে আমি গর্বিত।

অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণের ভয় তুচ্ছ করে আজ তারা রাস্তায় নেমেছে। শিক্ষিতা নারীরা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার ছক কষছেন। আমি নিজেও এর বাইরে নই।’ আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কালের কণ্ঠকে এভাবেই বলছিলেন আফগান তরুণী আলিফা আলেয়া (নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকৃত নাম ব্যবহার করা হয়নি)।

আফগানিস্তানে নারীদের বর্তমান অবস্থা, তালেবান শাসনে নারীর স্বাধীনতা এবং এই পরিস্থিতিতে নারীদের সঙ্গে কী রকম আচরণ করা হচ্ছে তারই বর্ণনা গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে শুনিয়েছেন সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী আলিফা।

তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে আফগানিস্তানে এখন নারীদের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো নয়। এখন নারীদের বাইরে কাজ করতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাইরেও বের হচ্ছে না কেউ। আমি বেশ কিছু সাংবাদিক এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী নারীদের সঙ্গে কথা বলেছি। যেসব মেয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেছে তাদের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংক থেকে বেছে বেছে নারী কর্মীদেরও বাসায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এরই মধ্যে এই খবর গোটা বিশ্বে চাউর হয়েছে।’

আলিফা বলেন, এর মধ্যেও আশার খবর হলো যে নারী সাংবাদিকের মধ্যে অনেকেই আজ থেকে কর্মস্থলে যেতে শুরু করেছেন। সবাই না গেলেও বেশির ভাগই সাহস নিয়ে কর্মস্থলে গেছেন। এরই মধ্যে তাঁদের খবর পড়া ও ইন্টারভিউ নেওয়ার দৃশ্য সব জায়গায় প্রচারিত হচ্ছে।

তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, তালেবান দেখাতে চাইছে যে তারা নারীদের বাইরে কাজ করতে দেবে। যদি সেটাই হয়ে থাকে তবে স্কুল-কলেজ ও অফিস থেকে নারীদের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন? নারীদের গণমাধ্যমের সামনে নিয়ে এসে দেখানো হচ্ছে যে নারীরা বাইরে কাজ করলে তাদের আপত্তি নেই। এটা প্রচারণার অংশ মাত্র। প্রতিটি মেয়েই এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কেউ বাইরে বের হচ্ছে না।

তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, যদি সব কিছু আগের মতোই থাকে তবে কেন তারা দেশ ছাড়তে চাইবে? সব কিছুই পরিষ্কার। একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভাবলেই বোঝা যাবে, আবার অতীতের ঘটনার প্রতিফলন হতে চলেছে। অন্য কিছু ভাবাটা বোকামি মাত্র।

আলিফা আরো বলেন, ‘আমি আমার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। অনেকেই এখন দেশ থেকে চলে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। কিন্তু এখন আফগানিস্তানে সব ফ্লাইট বন্ধ। এ জন্য চাইলেও তারা যেতে পারছে না। এখনো তারা বিভিন্ন জায়গায় সহযোগিতার জন্য ছোটাছুটি করছে।’

About reviewbd

Check Also

অহঙ্কার করা ভালোনা! রানু মণ্ডল তার প্রমাণ

কলকাতার রানাঘাটের স্টেশনের ভিক্ষুক থেকে মুম্বাইয়ের রেকর্ডিং স্টুডিওতে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে রাতারাতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *