যাদেরকে বিয়ে করা নি’ষিদ্ধ ও হারাম সে ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে সুস্প’ষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। বিয়ে করার আগেই জেনে নেয়া দরকার যে, যাকে বিয়ে করছেন তার সঙ্গে আপনার স”ম্পর্ক কী’? পাত্র-পাত্রীর সঙ্গে বংশগত, বৈবাহিক কিংবা ছোট বয়সে মায়ের বুকের দুধ পান করানোর কোনো স’ম্পর্ক আছে কিনা?
সাম্প্রতিক সময়গু’লোতে হারাম বিয়ের প্রবণতা মহামা’রি আকারে বাড়ছে। ভাই-বোন ছাড়াও স্ত্রী’র বোনের সঙ্গে প”রকী”য়া ও পালিয়ে বিয়ের ঘটনা, অন্যের বৈধ স্ত্রী’র সঙ্গে প”রকী”য় করে বিয়ে, আপন খালার সঙ্গে বিয়ে, আপন বোনের মে’য়ের সঙ্গে বিয়ের ঘটনাও ব্যাপক হারে ঘটে চলেছে। ইস’লামে এসব বিয়েও হারাম।
যাদেরকে বিয়ে করা যাব’ে না, সে তালিকায় কুরআনে ১৪ জনের নাম এসেছে। সুতরাং বংশতগত, বৈবাহিক কিংবা দুধপান করানোর ভিত্তিতে যাদের সঙ্গে বিয়ে নি’ষি’দ্ধ তাদের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধ’রা হলো। আল্লাহ তাআলা বলেন-
তোমা’দের জন্যে হারাম করা হয়েছে : তোমা’দের মা। তোমা’দের কন্যা। তোমা’দের বোন। তোমা’দের ফুফু। তোমা’দের খালা। ভাইয়ের মে’য়ে। বোনের মে’য়ে। তোমা’দের ওই মা, যারা তোমা’দেরকে নিজেদের বুকে দুধ পান করিয়েছে। তোমা’দের দুধ-বোন (বুকের দুধ পানকারীনী মায়ের মে’য়ে)। তোমা’দের স্ত্রী’দের মা (শাশুরি)। তোম’র’া যাদের সঙ্গে স’’হ’’বা’’স করেছ; সে সব স্ত্রী’দের মে’য়ে, যারা তোমা’দের লালন-পালনে আছে।
লালন পালনে থাকা মে’য়ের মায়ের সঙ্গে যদি স’’হ’’বা’’সের স’ম্পর্ক না থাকে, তবে এ বিয়েতে তোমা’দের কোনো গোনাহ নেই। তোমা’দের নিজ ছে’লেদের স্ত্রী’ (পুত্রবধু)। দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা। কিন্তু অ’তীত যা হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষ’মাকরী, দয়ালু এবং অন্যের বৈধ স্ত্রী’কে বিবাহ করা হারাম।’
বংশগত স’ম্পর্কের দিক থেকে যাদের বিয়ে করা হারাম। তারা হলো- আপন মা বিয়ে করা হারাম। মা থেকে উপরের দিকে নানি, নানির মা আবার মায়ের বোনসহ মা-এর মে’য়ে সন্তান, সন্তানের সন্তানকেও বিধানের আলোকে বিয়ে করা হারাম।
নিজের মে’য়েকে বিয়ে করা হরাম। মে’য়ে থেকে নিচের দিকে নাতনি (নিজ মে’য়ের মে’য়ে), নাতনির মে’য়ে এভাবে নিচের দিকের মে’য়েদের বিয়ে করা হারাম। এ ক্ষেত্রে ছে’লের ঘরের নাতনিসহ নিচের দিকের মে’য়েদেরও বিয়ে করা হারাম। আপন বোনকে বিয়ে করা। আবার বাবার অন্য স্ত্রী’র মে’য়েদেরও বিয়ে করা যেমন হারাম তেমনি মায়ের অন্য স্বামীর মে’য়েকেও বিয়ে করা হারাম। বাবার আপন বোন ফুফুকে বিয়ে করা হারাম।
আবার বাবার বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনকেও বিয়ে করা হারাম। মা-এর আপন বোনকে (খালা) বিয়ে করা হারাম। আবার মা-এর বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনকেও বিয়ে করা হারাম। ভাই-এর মে’য়ে ভাতিজির সঙ্গেও বিয়ে হারাম। ভাই আপন হোক কিংবা বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় হোক। বোন-এর মে’য়ে ভাগিনিকে বিয়ে করা হরাম। চাই সে বোন আপন হোক কিংবা বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় হোক।
বৈবাহিক স’ম্পর্কে যারা হারাম- স্ত্রী’দের মাকে (শাশুড়ি) বিয়ে করা হারাম। স্ত্রী’দের নানি, দাদিও এ বিধানের আলোকে হারাম। নিজ স্ত্রী’র সঙ্গে বিয়ের পর সহ’বাস করার পর স্ত্রী’র অন্য স্বামীর ঔরসজাত মে’য়েকে বিবাহ করাও হারাম। ছে’লের বউকে বিয়ে করা হারাম। ছে’লে শব্দের ব্যাপকতার কারণে পৌত্র ও দৌহিত্রের স্ত্রী’কেও বিয়ে করা যাব’ে না। বংশ ও দুধ মায়ের দিকে থেকে দুই বোনকে এক সঙ্গে বিয়ে করা হারাম। স্ত্রী’র ওই বোন হোক বৈমাত্রেয় কিংবা বৈপিত্রেয়। তবে যদি কোনো বোন মা’রা যায় কিংবা তালাকের মাধ্যমে স’ম্পর্ক ছিন’্ন হয় তবে নির্ধারিত সময়ের পর অন্য বোনকে বিয়ে করা যাব’ে।
বুকের দুধ পান করানোর কারণে যাদের দিয়ে করা হারাম : কুরআনে বিধান মতে দুধ মা ও দুধ বোনকে বিয়ে করা হারাম। যদি কোনো ছে’লে কিংবা মে’য়ে কোনো নারীর বুকের দুধ নির্দি’ষ্ট সময়কাল (২ বছর) পান করে তবে ওই সন্তানের জন্য দুধ পান করানো নারী তার মা, নারীর স্বামী তা বাবা, নারীর নিজ ছে’লে মে’য়ে তার ভাই-বোন, নারীর বোন তার খালা, স্বামীর বোন তার ফুফু হয়ে যায়। আর তাদের সঙ্গে সে সন্তানের বিয়েও হারাম হয়ে যায়।
তবে…খালাতো, মামাতো, ফুফাতো বা চাচাতো বোনদের বিয়ে করা হারাম নয়। চাচার মৃ”ত্যুর পর কিংবা চাচার কাছ থেকে তালাক পাওয়া নারীকেও বিয়ের বৈধতা দিয়েছে ইস’লাম। আল্লাহ তাআলা মু’সলিম উম্মাহকে বিয়ের ক্ষেত্রে কুরআন সুন্নাহর বিধান মোতাবেক বিয়ে করার তাওফিক দান করুন। সব অ’বৈধ স’ম্পর্ক ও প”রকী”য়ার পাশাপাশি অ’বৈধ বিয়ে থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।